ফ্যানের বাজারেও ‘গরম হাওয়া’

দেশে চলমান তীব্র তাপদাহে ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে ফ্যানের। উচ্চ ও মধ্যবিত্তরা এয়ার কন্ডিশনারে শীতল হলেও নিম্ন আয়ের মানুষের একমাত্র ভরসা বৈদ্যুতিক ও রিচার্জেবল ফ্যান।

এতে ফ্যানের বাজারেও ‘গরম হাওয়া’ অনুভব করা গেছে। অন্যান্য সময় যে ফ্যানের দাম দুই হাজার থেকে ২৫০০ টাকা, এখন সেই ফ্যান মার্কেটে বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার দুশো থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়।

ব্যবসায়ীরা গলাকাটা দাম নিলেও বাধ্য হয়েই রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে ফ্যান কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদা বেশি থাকায় এসব পণ্যের দাম বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো।

রাজধানীর নবাবপুর, গুলিস্তান, বায়তুল মোকাররম মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, চার্জার ফ্যান, স্ট্যান্ড ফ্যান, সিলিং ফ্যানের দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। তবে চার্জার ফ্যানের দোকানে ভিড় দেখা গেছে তুলনামূলক বেশি। বেশির ভাগ চার্জার ফ্যান চীন থেকে আমদানি করা বলে বিক্রি হচ্ছে।

বর্তমানে বিভিন্ন আকার ও ব্র্যান্ডের চার্জার ফ্যান বিক্রি হচ্ছে সাড়ে তিন থেকে ১০ হাজার টাকায়। হাতে নিয়ে চলা যায়, এমন ছোট ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন ফুটপাতেও চার্জার ফ্যানের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকনদাররা।

রাজধানীর গুলিস্তানের স্টেডিয়াম মার্কেটের সরেজমিনে দেখা গেছে, অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেচাকেনা বেড়েছে। বেশিরভাগ বিক্রেতা রিচার্জেবল জিনিস খুঁজছেন। তবে দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগ ছিল সবার।

স্টেডিয়াম মার্কেটে চার্জার ফ্যান কিনতে আসা মোক্তার বলেন, ‘যে গরম শুরু হইছে, সিলিং ফ্যানে কাজ হয় না তাই স্ট্যান ফ্যান কিনতে আসছি।’তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কোনো কিছুর চাহিদা বেশি থাকলেই এরা দাম বাড়িয়ে দেয়। এটা আমাদের দেশের একটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। সবাই যে যার খেয়াল খুশি মতো চলছে। শুধু ফ্যানের দাম না, সব ক্ষেত্রেই এমন।’

আরেকজন ক্রেতা বলেন, ‘কয়েক দিন আগেও এসে শুনি চার্জার ফ্যানই নাকি নাই, ঘুরে গেছি। আজকে পর্যাপ্ত ফ্যান দেখতেছি, তবে দামটা অনেক বেশি।’এদিকে দোকানদাররা বলছেন, কোম্পানি বেশি দাম নিলে আমরা কী করব। বাধ্য হয়ে তাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।

স্টেডিয়াম মার্কেটের এক দোকানদার আবু সাইদ বলেন, ‘আগে ১২ ইঞ্চি একটা ফ্যান আমরা বিক্রি করেছি দুই হাজার পঁচিশ শ টাকায়, এখন সেই ফ্যান ৩৫০০-৪০০০ টাকা বিক্রি না করলে পোষায় না। এখন তো তাও মাল পাওয়া যাচ্ছে, গতবছর এই সময় তো মালই পাওয়া যাচ্ছিল না।’

একই অবস্থা রাজধানীর নবাবপুরসহ অন্যান্য মার্কেটগুলোতেও। জানা গেছে, ১২ ইঞ্চি একটি ফ্যান আগের পাইকারি রেট ছিল দুই হাজার থেকে ২৫০০ টাকা, এখন সেটা ২৮০০ থেকে তিন হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে৷ আর শোরুমে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০০-৪৫০০ টাকায়৷ ১২ ইঞ্চি স্মার্ট ফ্যান বিক্রি হতো ৩০০০ টাকায়৷ সেটা মাঝে ২৪০০ টাকায় বিক্রি করেছিলেন৷ এখন ৩৩০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে৷

এছাড়াও মার্কেটে রয়েছে ওয়ালটন, ভিসন, সানকা, সুপার স্টার চার্জার ফ্যান। সব ফ্যানেরই দাম বাড়তি।

তবে বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। অনেক দোকানদারকে জরিমানাও করা হচ্ছে। তবু কমছে না এসব জিনিসের দাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *