সারাদেশে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি চক্রের নয়জনকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। চক্রটির মূলহোতা গ্রেফতারকৃত সহজ ডটকমের পিয়ন মো. মিজান ঢালী ও সার্ভার অপারেটর নিউটন বিশ্বাস। তাদের নেতৃত্বে সারাদেশব্যাপী একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছিল। ট্রেনের টিকেট তারাই ব্লক করে রাখতেন। ফলে সাধারণ যাত্রীরা সার্ভারে ঢুকলেও টিকেট পেতেন না।
এসব টিকেট তারা তুলে নিয়ে অন্যদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করতেন। প্রতিজন এ টিকেট বিক্রি করে মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা কামাতেন। তবে টিকেট বিক্রির টাকা দুই ভাগে ভাগ করতো চক্রটি। কালোবাজারির অর্থ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে ৫০ ভাগ সহজ ডটকম ও রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারম্যানরা পেতো এবং বাকি ৫০ ভাগ সিন্ডিকেটের মূলহোতা গ্রেফতারকৃত মিজান, সোহেলসহ বাকি বিক্রয়কারী সহযোগীদের মাঝে ভাগাভাগি হতো।
শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি চক্রের নয়জনকে গ্রেফতারের পর এ ব্যাপারে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, তারাই সব টিকেট কালোবাজারি করতেন। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ট্রেনের টিকিট প্রত্যাশীদের কাছে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে টিকিটগুলো প্রেরণ করতেন তারা।
এই অর্থ কখনো তারা নগদ টাকা হাতে-হাতে বুঝিয়ে দিতো আবার কখনো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করতো। সিন্ডিকেটের প্রত্যেক সদস্য অবৈধভাবে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করে প্রতি মাসে ২০/২৫ হাজার টাকা উপার্জন করতো। এভাবেই পরষ্পরের যোগসাজশে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে দেশব্যাপী ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল।
পাঠাও চালক, হোটেলের ক্লিনার, হোটেলের বয়রাও কালোবাজারিতে!
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মঈন বলেন, গ্রেফতারকৃত শাহজালাল একজন পাঠাও চালক, জাহাঙ্গীর কমলাপুরে অবস্থিত একটি আবাসিক হোটেলের ক্লিনার, গ্রেফতারকৃত রাসেল একই আবাসিক হোটেলের বয় এবং গ্রেফতারকৃত জয়নাল অপর একটি আবাসিক হোটেলের বয়। তারা তাদের এ সকল কর্মস্থলে কাজের পাশাপাশি সব সময় অবৈধ উপায়ে টিকিট প্রত্যাশী যাত্রী যোগাড় করে কালোবাজারির মাধ্যমে সংগ্রহকৃত টিকিটগুলো নির্ধারিত মূল্যের চাইতে প্রায় ২ গুণ বেশি মূল্যে বিক্রি করতেন।