চড়া, গরমেও ডাব বিক্রেতাদের মাথায় হাত!

দেশে চলছে ‘অতি তীব্র’ তাপপ্রবাহ। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা খেটে খাওয়া মানুষের। উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে বেড়েছে ডাবের চাহিদা। তবুও মাথায় হাত ডাব বিক্রেতাদের। গরমের তীব্রতা বেশি হলেও চড়া দামের কারণে ধ্বস নেমেছে বিক্রিতে। ফলে সারাদিনে অর্ধেকও বিক্রি করতে পারছে না বিক্রেতারা। তারা বলছেন— তীব্র গরমে প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে যাচ্ছেন না অনেকে। এতে গ্রাহক কমে গেছে। প্রভাব পড়েছে বিক্রিতে। 

রুমন একজন ডাব বিক্রেতা। রাজধানীর ঘাটারচর এলাকায় ডাবের দোকান তার। সকালে দোকান খুলেছেন ২৫টি ডাব নিয়ে। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী দোকানে ডাব তুলেছিলেন। কিন্তু সবগুলো বিক্রি হচ্ছে না। আজ যে ডাব নিয়ে দোকান খুলেছেন সেগুলো গতকালকের থেকে যাওয়া। তবুও বিকেল ৩টা পর্যন্ত ডাব বিক্রি হয়েছে মাত্র ১২টি। যা দোকানে মজুত করা মোট ডাবের অর্ধেক।

এনিয়ে কথা হয় রুমনের সঙ্গে।  তিনি বলেন, শনিবার ৫০টি ডাব পাইকারী দরে কিনেছি। গতকাল পর্যন্ত ২৫টি ডাব বিক্রি হয়েছে। বাকি ডাব আজ বিক্রি করছি।

green-coconat

রুমনের মতো একই অবস্থা অন্য বিক্রেতাদেরও। তাদেরই একজন মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকার শামসুল। ক্রেতাদের সুবিধার্থে রাস্তার পাশেই বসেছেন বড় ছাতা মেলে। কিন্তু ক্রেতা নেই। বিক্রি কম, এজন্য পাশের কলা বিক্রেতার সঙ্গে গল্প করছিলেন।

শামসুল জানালেন, কয়েকদিন আগেও সারাদিনে বিক্রি হতো ৪০-৫০টি ডাব। গরমের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাটা পড়েছে তার বিক্রিতেও। গ্রাহক কমে গেছে। আজ বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন ২০টি ডাব। যা আগের তুলনায় অর্ধেক।

অবশ্য তার কাছে থাকা ডাবগুলো আকারে কিছুটা বড়। ফলে তুলনামূলক বেশি দামে বিক্রি করছেন তিনি। শামসুল জানালেন, ১৪০ থেকে দেড়শ টাকায় বিক্রি করছেন প্রতিটি ডাব। এর নিচে বিক্রি করছেন না। চড়া দামের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, বাজারে কচি ডাব আসছে। সংকট নেই। পাইকারদের কাছ থেকে কিনতে হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়। এজন্য সবচেয়ে ছোট ডাবটিও ১০০ টাকার নিচে ছাড়ছেন না তিনি।

green2

শামসুলের কাছ থেকে একটু এগোতেই আরেক বিক্রেতার সঙ্গে। বসে আছেন হাত-পা ছেড়ে। ক্রেতা নেই। তবে এমন চিত্র শুধু বেড়িবাঁধ এলাকার ডাব বিক্রেতাদের নয়, ধানমন্ডি, বছিলা, শাহবাগ ও বেইলি রোডেও অবস্থা একই।

জিয়া ডাব বিক্রি করেন পরীবাগের বিপরীত সড়কে। ভ্যানে থরে থরে সাজিয়ে রেখেছেন শখানেক ডাব। জানালেন, বিক্রির অবস্থা ভালো না। প্রচণ্ড রোদে ভ্যানের সঙ্গে দাঁড়ানো কঠিন। ফলে বেশির ভাগ সময় কাটান পাশের চায়ের দোকানে। তিনি বলেন, গ্রাহক নেই। বিক্রিও হচ্ছে না।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ডাব পাইকাররা বলছেন— খুচরা বাজারে ডাব বিক্রি কমে গেছে। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের। আগে প্রতিদিন ডাবের চালান আনতে হতো। এখন সেই সাহসও পাচ্ছেন না তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *