আবারও ফিরেছে হাতঘড়ির ফ্যাশন

একটা সময় ছিল হাতঘড়ি দেখে মানুষ তাদের দৈনন্দিন কাজগুলো পরিচালনা করতেন। তবে মুঠোফোন এসে হাতঘড়ির গুরুত্ব ম্লান করে দিয়েছে। কিন্তু দিন দিন আবার হাতঘড়ি আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

বর্তমানে ঘড়ি হচ্ছে ফ্যাশন ও ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ। হাতে একটি ভালো মানের ঘড়ি ব্যক্তিত্ব উপস্থাপনে ভূমিকা রাখে। সময় দেখার পাশাপাশি ঘড়ি এখন ফ্যাশনেরও উপকরণ।

রাজধানীর ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় উঠলে সিঁড়ির বাম পাশেই দেখা মিলে তিনটি ঘড়ির দোকান। এ দোকানগুলোয় বাহারি ঘড়ি কিনতে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ঘড়ির সঙ্গে এ দোকানগুলোতে মিলছে সানগ্লাস, চশমা ও মাথার ক্যাপ। তবে ঘড়ির ক্রেতা বেশি দেখা যায়।

তিন দোকানের একটির কর্মী সোহেল জানালেন, গত কয়েক দিন থেকে ঘড়ির বেচা-বিক্রি ভালো হচ্ছে। তারা বেশির ভাগ ঘড়ি চায়না থেকে নিয়ে আসেন। এসব চায়না ঘড়ি ২০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন তারা।

রোববার (০৭ এপ্রিল) রাতে সরেজমিনে বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, ঈদকে কেন্দ্র করে ঘড়ির চাহিদা বেড়েছে। যা দোকানিদের সাথে কথা বলে ও দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে তার প্রমাণও মিলেছে। হাতঘড়ির বেশির ভাগ ক্রেতা উঠতি তরুণ ও তরুণীরা।

হাসনাইন ও রুবেল। তারা আজিমপুরেই থাকেন। ঘড়ি কেনার জন্য এসেছিলেন। পরে একটি ঘড়ি পছন্দ করে ১ হাজার ২০০ টাকায় নিলেন তারা।

আবার অনেকেই তার প্রিয়জনকে ঘড়ি উপহার দিতেও দোকানগুলোতে ভিড় করছেন। আছে লেডিস, জেন্টস ও বাচ্চাদের ঘড়িও।

বিশ্বের সেরা ঘড়ির ব্র্যান্ড ক্যাসিও। তবে সেই ঘড়ি এখন আর দেখা মিলছে না। কেন মিলছে না তার কারণ জানালেন দোকান কর্মী সোহেল।

তিনি জানান, বেশির ভাগ ঘড়ির বাজার এখন চায়নার দখলে। তারা চাবি দেওয়া, সংখ্যা ভেসে ওঠাসহ নানা ঘড়ি নিয়ে ক্রেতার মন জয় করেছে। চায়না ঘড়িগুলো বেশ মানেও ভালো। একটি ঘড়ি অন্তত দেড় দুই বছর অনায়াসে যায়। এর মাঝে কোনোটা টিকে যায়।

মোহাম্মদপুর থেকে এসেছেন কলেজ পড়ুয়া ছাত্র রিফাত। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, আগে বাবাকে দেখতাম দারুণ দারুণ সব ঘড়ি পরতেন। আমিও ছোটবেলা পরেছি। মাঝে বাদ দিয়েছিলাম। কিন্তু এবার ঈদে মনে হলো ঘড়ির ফ্যাশন ফিরেছে। ফলে চলে আসলাম।

আরেকটি দোকানের সুমন নামে এক কর্মী জানালেন, তারা যতো ঘড়ি বিক্রি করছেন তার মধ্যে চেইনওয়ালা সোনালি কালারের ঘড়িগুলোর চাহিদা বেশি। তিনি আরও জানান, ঘড়ি ক্রেতার তালিকায় আছেন নারীরাও। আগের মতো বিয়ে-সাদীতে ঘড়ি উপহার দেওয়ার চল আবারো ফিরেছে বলেও জানালেন তিনি।

পাঁচ বছরের ছোট মেয়েকে ঘড়ি কিনে দিতে এসেছিলেন নয়ন সরকার। তিনি বলেন, মেয়ে তার আন্টির হাতে ঘড়ি দেখে বলছিল বাবা ঘড়ি নেব। তাই আসলাম। কিন্তু ঘড়ির কালেকশন দেখে অবাক হলাম। এত ডিজাইনের ঘড়ি! তার মতে, আবারও ঘড়ির ফ্যাশন বাংলাদেশে ফিরছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *