রূপগঞ্জে কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে মরছে মাছ, অসুস্থ হচ্ছে মানুষ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত ক্যামিকেলের বর্জ্যে জমির পানি দুষিত হয়ে ৩ লাখ টাকার মাছ মরে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে এলাকার লোকজন নানা রোগে অসুস্থ হচ্ছেন।

জানাগেছে, উপজেলার তারাব পৌরসভার কর্ণগোপ এলাকায় ওয়েস্ট নিটওয়ার লিমিটেড নামের একটি ডাইং কারখানা পাইপ দিয়ে তাদের বিষাক্ত বর্জ্যমিশ্রিত পানি পাশের ডোবায় ছেড়ে দেয়। আর একটু বৃষ্টি হলেই ডোবা ডুবে গিয়ে ওই ডোবার বিষাক্ত বর্জ্যমিশ্রিত পানি পাশ^বর্তী পুকুর, জমি ও চলাচলের সড়ক উঠে যায়।

এতে ওই সব পুকুর ও জমিতে গড়ে উঠা মাছের খামারের কয়েক লাখ টাকার মাছ মরে যায়। এছাড়াও সড়ক বিষাক্ত বর্জ্যমিশ্রিত পানিতে ডুবে যাওয়ায় ওই পানি মাড়িয়েই লোকজনদের চলাচল করতে হয়। এতে মানুষের মধ্যে নানা ধরনের রোগবালাই দেখা দিচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ এখানকার কারখানা গুলো পানি সুদানাগার প্লান (ইটিপি) থাকলেও তারা তা ব্যবহার করনে না।

এদিকে কর্ণগোপ এলাকায় হাসনাত মিয়া নামে এক ব্যক্তি কয়েক বিঘা জমি নিয়ে কাতল, রুই, তেলাপিয়া ও কার্প মাছসহ নানা প্রজাতির মাছের চাষ করছেন। শনিবার সকাল থেকে তিনি পুকুর থেকে মরা মাছ তুলছেন।

তার দাবি ওয়েস্ট নিটওয়ার লিমিটেড ডাইং কারখানা পাইপ দিয়ে তাদের বিষাক্ত পানি পুকুরের পাশে ডোবায় ছেড়ে দেয়। দুদিন আগের বৃষ্টিতে ওই ডোবাটি ডুবে গেলে কারখানার বিষাক্ত পানি তার পুকুরে ঢুকে যায়। এতে চাষের জন্য ছাড়া প্রায় ৩ লাখ টাকার মাছ মরে পানির উপর ভাসতে থাকে।

হাসনাত মিয়া জানান, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে কারখানার দায়িত্বরত একজন ব্যক্তি আমাকে ফোনে জানান অভিযোগ না করতে। বিষয়টি তারা দেখবেন।

নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলেন, এসব বিষয়ে কথা বললেই তারাবো পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রিপন ভূঁইয়া নামের এক ব্যক্তি মামলা হামলার হুমকি ধামকি দেন। তাছাড়া তারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসে এই এলাকায় বসবাস করায় প্রতিবাদ করতে ভয় পান বলে জানান। এ অবস্থা থেকে দ্রুত মুক্তির দাবিও জানান তারা।

তবে রিপন ভূঁইয়া বলেন, পানি ইটিপি প্লানের মাধ্যমে সুদানাগার করে ছাড়া হয়। এখানে শুধু ওই কারখানার পানি ছাড়া হয় তা নয় সকল কারখানার পানি ছাড়া হয়। কারো কোন ক্ষতি হলে সামনাসামনি বলুক ক্ষতিপূরণ নিয়ে দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে ওয়েস্ট নিটওয়ার লিমিটেড কারখানার যোগাযোগ করা হলে ওয়েস্ট নিটওয়ার লিমিটেড এর মালিক ফরিদ কথা বলতে রাজি নয় বলে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর বলেন, আমাদের উপজেলায় দূষিত পানি পরীক্ষার জন্য তেমন কোন সরঞ্জাম নেই তবে আমরা ঘটনার সত্যতা পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।

কারখানাকে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করবো। শিল্প কারখানা আইনে তার বিরুদ্ধে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *