রাজউকের হাতে থাকা লেকগুলোর নিয়ন্ত্রণ চায় সিটি করপোরেশন

রাজধানী উন্নয়ন করপোরেশনের (রাজউক) অধীনে থাকা লেকগুলো সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। লেকগুলোর নিয়ন্ত্রণ পেলে মাছ চাষ, ওয়াটার বাস চালুসহ নানা উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান মেয়র।

শনিবার (১৬ মার্চ) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও গুলশান সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে গুলশান লেক পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মেয়র আতিক বলেন, লেকগুলো পরিষ্কার করে দেওয়া গুলশান এলাকার মানুষের জন্য ঈদ উপহার। গুলশানের লেক দীর্ঘদিন ধরে শুষ্ক অবস্থায় ছিল, বিভিন্ন স্থানের মল মূত্র পড়ত এই লেকে, ছিল দুর্গন্ধ। এই লেককে পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। তবে লেকটি এখন রাজউকের অধীনে হলেও সিটি করপোরেশন নিজ দায়িত্ব নিয়েই কাজ করছে।

লেকগুলো সিটি করপোরেশনকে দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, গুলশান, বারিধারা লেক এখনো রাজউকের অধীনে আছে। তাদের আমি চিঠি দিয়েছি এগুলো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অধীনে দিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু এই লেক এখনো রাজউকের অধীনে রয়ে গেছে। আমরা তাদের বলেছি, এই লেক পরিষ্কার করার জন্য, কিন্তু তারা করেনি, সিটি করপোরেশনকেও দেয়নি। কিন্তু কে এলো না এলো আমরা সেটা দেখব না।

আতিক বলেন, গুলশান মসজিদের সামনে লেকের অবস্থা জাহান্নাম থেকেও খারাপ হয়ে আছে। এই এলাকার মলমূত্র সব এখানে ফেলা হয়। এটি মেনে নেওয়া যায় না। এই লেকগুলোতে মাছের চাষ হয় না, মশার চাষ হচ্ছে। আমি চাই এই লেকগুলোতে শিশুরা খেলবে। ওয়াটার টেক্সি চলবে। আরও আধুনিক যন্ত্র থাকবে যা দিয়ে তারা খেলবে। কিন্তু পানি হয়ে আছে শতভাগ দূষিত। পানিতে এমোনিয়ার গন্ধ। এখানকার কোনো মানুষ এই লেক থেকে উপকৃত হচ্ছে না। এই এলাকায় বলা হয় অতিরিক্ত মশা, তা এই লেকগুলো থেকে হয়। এই লেককে পরিষ্কার করে দেওয়া গুলশান এলাকার মানুষের জন্য ঈদ উপহার।

মেয়র বলেন, গুলশান এলাকায় এখানে অনেক গুলশান সোসাইটি মসজিদ আছে। এখানকার মুসল্লিরা প্রায়ই অভিযোগ জানায় পাশের লেক থেকে দুর্গন্ধ আসে। এসব সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী এম এ আরাফাতকে এই এলাকা পরিচ্ছন্নতা ও লেক পুনঃজীবিত করার এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বললে তারা নিজ থেকে স্বতঃস্পূর্তভাবে এই অনুষ্ঠানে এসেছেন।

Atik2

মানুষকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের একার পক্ষে একটা সোসাইটিকে সুন্দর করা সম্ভব না, যতক্ষণ না এখানকার মানুষই এগিয়ে আসে। আজকে এখানকার বিভিন্ন  স্বনামধন্য স্কুলের শিক্ষার্থীরা ও শিশুরা এই কার্যক্রমে উপস্থিত হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন ফাউন্ডেশন ও এখানে উপস্থিত হয়েছে। আমরা দেখছি বিভিন্ন জায়গা থেকে পয়ঃবর্জ্য  এই লেকে এসে পড়ছে। আজকে থেকে এই এলাকায় অভিযান চলবে। যারা বর্জ্য সরাসরি ফেলবে তাদের ড্রেনে আমি কলাগাছ থেরাপি দেব। যাতে করে এই বর্জ্য আবার তাদের দিকে ব্যাক যায়।

মেয়র বলেন, ড্রেনের সাথে কোন কানেক্ট দিয়েছে মানুষ। এখানকার একেকটি ফ্ল্যাট ২৫ কোটি, ৫০ কোটি। সেখানে ড্রেনের সাথে একটি চোরাই পাইপ সংযুক্ত করা হচ্ছে। এই ড্রেন দিয়ে শুধু বৃষ্টির পানি যাওয়ার কথা। ছোট ইপিপি প্ল্যান্ট করতে মাত্র তিন লাখ টাকা লাগে। এসব প্ল্যান্ট করতে রাস্তার নিছে যতটুকু জায়গা লাগে সিটি করপোরেশন ব্যবস্থা করে দেবে। আমরা চাই শুধু সরকার না এলাকাবাসীও এগিয়ে আসবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, গুলশান সোসাইটির সভাপতি ব্যারিস্টার ওমর সাদাতসহ বিভিন্ন দূতাবাস থেকে আমন্ত্রিত অতিথিরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *