নারায়ণগঞ্জে পেঁয়াজের দামে ঊর্ধ্বগতি, চড়া সবজির বাজার

নারায়ণগঞ্জের কাঁচা বাজারগুলোতে পবিত্র ঈদুল আজহাকে ঘিরে হু হু করে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। তবে সামনে আরও বাড়বে বলে আশংকা বিক্রেতাদের। কিন্তু ক্ষোভ বাড়ছে ক্রেতাদের মাঝে। তারা বলেন, এমনিতেই কোরবানীর ঈদে পেঁয়াজের চাহিা বেশি থাকে। তারউর এভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকলে মানুষ যাবে কোথায়? এটা দেখার কি কেউ নাই।

অন্যদিকে বাজারগুলোতে বেশিরভাগ সবজির দাম চড়া। ৬০ টাকার নিচে মিলছে না অধিকাংশ সবজি। একই সঙ্গে মাছ-মাংসের বাজারেও বাড়তি দামের প্রভাব।

বিক্রেতারা বলছেন, দামবৃদ্ধির পেছনে আমাদের কোনো হাত নেই। বাজারে সরবরাহ কম। ফলে আমাদেরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। রবিবার (২ জুন) সকালে সরেজমিনে নারায়ণগঞ্জ শহরের অন্যতম পাইকারি কাঁচাবাজার দিগুবাবুর বাজারসহ একাধিক বাজার ঘুরে পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির চিত্র দেখা গেছে।

বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে যা ছিল ৭০ টাকা। পটল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি, শসা প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঝিঙা প্রতিকেজি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, জালি কুমড়া প্রতি পিস ৬০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়শ প্রতিকেজি ৭০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, কচুর লতি প্রতিকেজি ৬০ টাকা, গাজর প্রতিকেজি ৮০ টাকা, ধুন্দল প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, বরবটি প্রতিকেজি ৬০ টাকা, করলা প্রতিকেজি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতিকেজি ৪০ টাকা, টমেটো প্রতিকেজি ৬০ টাকা, কচুরমুখী ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ মানভেদে প্রতিকেজি ২০০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী, ১০০০-১৮০০ টাকা, রুই মাছ ৩৮০-৬০০ টাকা, কাতল মাছ ৪৫০-৫৫০ টাকা, কালিবাউশ ৪০০-৫০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৭৫০- ১৪০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৪০০ টাকা, কই মাছ ২৬০-৪০০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-১০০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬৫০-৭০০ টাকা, বেলে মাছ ৬০০-১২০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৭০০-১০০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ১২০০-১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগি ২১০-২১৫ টাকা, কক মুরগি ৩৩০-৩৪০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩৫০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৬০ টাকা, গরুর মাংস ৭৮০-৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুরগির লাল ডিম ১৫০ টাকা এবং সাদা ডিম ১৪৫ টাকা প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে প্যাকেট পোলাও চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ১১৫-১৪০ টাকা, ছোট মসুরের ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১২০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১২০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কমিটির অন্যতম সদস্য বিল্লাল হোসেন রবিন বলেন, ঈদুল আযহায় পেঁয়াজের চাহিদা বেড়ে যায়। এই চাহিদাকে পূজি করে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ি সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয় নিজেদের খেয়াল খুশি মতো। একই চিত্র কাচা শাকসবজি, মাছ-মাংস ও নিত্যপণ্যের বাজারে। এই জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো সমন্বিতভাবে নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও অসাধু ব্যবসায়িদের জেল-জরিমানার আওতায় আনলে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *