বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ভুটানের রাজার শ্রদ্ধা

রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। দুপুরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান তিনি।

এর আগে সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন ভুটানের রাজা। তাকে শুভেচ্ছা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

এ সময় বিমানবন্দরে ভুটানের রাজাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। রাজার সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন ভুটানের রানি জেতসুন পেমা, পরিবারের সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রীগণ ও পদস্থ কর্মকর্তারা।

রাষ্ট্রীয় অতিথিকে অভ্যর্থনার অংশ হিসেবে রাজা বিমান থেকে বের নামার পর ২১ বার তোপধ্বনি দেওয়া হয়। পরে সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল অতিথিকে অভিবাদন জানায়।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ভুটানের রাজা অভিনন্দন মঞ্চে নির্ধারিত স্থানে দাঁড়ানোর পর দুই দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। পরে রাজা প্যারেড পরিদর্শন করেন।

কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন প্রেজেন্টেশন লাইনে অপেক্ষারত বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলকে পরিচয় করিয়ে দেন। অন্যদিকে ভুটানের রাজা ও তাঁর প্রতিনিধিগণকে পরিচয় করিয়ে দেন।

এ সময় মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, তিন বাহিনী প্রধানগণ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিবগণ, পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নবগঠিত সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর এটাই কোনো বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের প্রথম সফর। এই সফরে ভুটানের রাজা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। দ্বিপাক্ষিক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি তিনটি চুক্তি স্বাক্ষর ও একটি চুক্তি নবায়নের কথা রয়েছে।

bhutan

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানান, ২৫ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সফরে ভুটানের রাজা আমাদের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।

আজ দুপুরে প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের কথা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতে স্বাস্থ্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, পর্যটন, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি সমন্বয়, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ট্রানজিট, অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি, ভারতকে সাথে নিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিনিময়ে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা, স্বল্পোন্নত হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে উদ্ভূত চ্যালঞ্জসমূহ মোকাবিলায় সহযোগিতা আলোচনায় প্রাধান্য পাবে বলে জানান ড. হাছান।

হাছান মাহমুদ জানান, ভুটানের রাজা ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে ভোরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, সকালে শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউিট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল পরিদর্শন, বিকেলে রাষ্ট্রপতির সাথে বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।

মন্ত্রী বলেন, ২৭ মার্চ পদ্মা সেতু এবং নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্পেশাল ইকোনমিক জোন পরিদর্শন এবং ২৮ মার্চ কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন শেষে বিকেলে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে রাজা বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী রাজাকে বিদায় জানাবেন ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গার্ড অব অনার প্রদান করবেন।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক ও রানি জেতসুন পেমা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *