Category: অন্যান্য

  • পঙ্গু হাসপাতালে ক্ষোভের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

    পঙ্গু হাসপাতালে ক্ষোভের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

    আলোরধারা ডেস্ক:

    জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) চিকিৎসা নিতে আসা জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহতদের দেখতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। এ সময় উপদেষ্টার গাড়ির ওপর উঠে পড়েন জুলাই আন্দোলনে আহতরা।

    বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১টার দিকে নিটোরের জরুরি বিভাগের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

    সরেজমিনে দেখা যায়, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে নিটোরে থাকা আহত রোগীদের খোঁজখবর নেন। এরপর হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার সময় সেখানে সাংবাদিকরা কথা বলতে চাইলে আশপাশে আহত রোগীদের সরতে বলা হয়। এরপর হাসপাতালে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। আহতরা উপদেষ্টার গাড়ির সামনে পথ আটকে দাঁড়ান।

    এক পর্যায়ে আন্দোলনে আহতদের একজন গাড়ির সামনে বসে পড়েন। আরেকজন উঠে পড়েন গাড়ির ওপর। কিছু সময় তারা গাড়িতে কিল-ঘুসি মেরে ক্ষোভ দেখাতে থাকেন। নেমে আসতে বলেন গাড়িচালকসহ অন্যদের।

    পরে নিরূপায় হয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত অন্য একটি গাড়িতে সেখান থেকে বেরিয়ে যান। পরে তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই গাড়ি ও প্রটোকলে থাকা পুলিশের একটি গাড়ি আটকে দেয় এবং রাস্তায় অবস্থান নেয়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আগারগাঁও থেকে শ্যামলীমুখী সড়ক বন্ধ রয়েছে।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসাধীন আন্দোলনরতরা জানান, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সিলেকটিভ কিছু রোগীর সঙ্গেই কথা বলেছেন, তাদের প্রত্যাশা ছিল তিনি যেন সবার খোঁজ নেন। সমস্যা শুনে সমাধানের কার্যকর উদ্যোগ নেন। কিন্তু মনের কথাগুলো শোনাতে না পেরে তারা ক্ষুব্ধ হন। কেউ কেউ খাওয়া-দাওয়ার মান নিয়েও অভিযোগ করেন।

    এছাড়া তাদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা ও ভালো চিকিৎসা দিতে বিদেশে নেওয়ার আবেদন জানালেও ব্যবস্থা নেয়নি কেউ।

  • পাকা পেঁপের যত  অজানা উপকার

    পাকা পেঁপের যত অজানা উপকার

    আলোরধারা ডেস্ক:

    পেঁপে মূলত পাকা ও কাঁচা দুইভাবেই আমরা খেয়ে থাকি। তবে পাকা পেঁপের অনেক উপকারিতা রয়েছে, যা আমাদের অনেকেরই অজানা। পাকা পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার পাওয়া যায়। এই ফলটিতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, কে এবং ই।

    একই সঙ্গে আরো রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, কপার, পটাসিয়াম, ফসফরাস, ফসফেট, ক্যালসিয়াম, আয়রনসহ প্যান্ট্রোথেনিক এসিড এবং প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। নানাভাবে পাকা পেঁপে আমাদের শরীরের অনেক উপকার করে থাকে—

    হজমে সাহায্য করে : বিপাকক্রিয়ায় সাহায্য করে পাকা পেঁপে। পাকা পেঁপেতে থাকে উচ্চমাত্রার ফাইবার ও প্রচুর পানি, তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ও পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

     

    হার্ট ভালো রাখে : পেঁপেতে পটাসিয়াম, ভিটামিন, ফাইবার থাকায় হার্টের সুরক্ষা করে, আর রক্তনালি পরিষ্কার থাকে। তাই হার্টকে ভালো রাখতে পাকা পেঁপে অনেক উপকারী।

    ক্যান্সার দূর করে : পাকা পেঁপেতে থাকে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। বিশেষ করে প্রোস্টেট ক্যান্সার এবং কোলন ক্যান্সার।

    শরীরের ব্যথা দূর করে : পাকা পেঁপেতে থাকে ভিটামিন ‘কে’, যা শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে, ফলে শরীরের ব্যথা কমায়। হাড় মজবুত হয় এবং ভালো রাখে। অস্টিওপোরোসিসের রোগীদের পাকা পেঁপে খেলে শরীরের ব্যথা দূর হয়।

    দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে : পাকা পেঁপে চোখের জন্য অনেক ভালো। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, সি, ই এবং কে-এর উপস্থিতির কারণে চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো করে।

    চর্বি কমাতে সাহায্য করে : শরীরের চর্বি কমাতে পাকা পেঁপের তুলনা হয় না। এটি প্রচুর ফাইবার সমৃদ্ধ ও কম ক্যালরিযুক্ত। তাই যদি ওজন কমাতে চাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পাকা পেঁপে রাখা জরুরি।

    ত্বক ও চুল ভালো রাখে : ত্বকের সমস্যা দূর করার জন্য পাকা পেঁপে অনেক ভালো। এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল, তাই আমাদের ত্বক ও চুল ভালো রাখতে পাকা পেঁপে অনেক উপকারী। এটি ত্বককে করে লাবণ্যময়ী ও উজ্জ্বল। এ ছাড়া ব্রনের সমস্যা সমাধানে পাকা পেঁপে ভালো কাজ করে।

  • দাঁত দিয়ে নখ কাটার যত ক্ষতি

    দাঁত দিয়ে নখ কাটার যত ক্ষতি

    আলোরধারা ডেস্ক:

    দাঁত দিয়ে অনেকেই নখ কাটেন। আসলে এটি এক ধরনের বদভ্যাস। দাঁত দিয়ে নখ কাটলে নখের শেপ বা আকৃতি নষ্ট হয়ে যায়। আবার সঠিকভাবে নখের বৃদ্ধিও কমে যায়। জানলে অবাক হবেন, দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাসে অজান্তেই আপনার শরীরে নানা রোগ বাসা বাধতে পারে।

    দাঁত দিয়ে নখ কাটার যত ক্ষতি

    ১. দাঁত দিয়ে নখ কাটার বদভ্যাস থাকলে আপনার নখের গঠন দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে সহজে নখ ভেঙে যায়।

    ২. এই অভ্যাসের কারণে নখের আশপাশে চামড়ায় প্রভাব ফেলবে। এর পাশাপাশি নখের কিউটিকেল দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে নখের সঠিক বৃদ্ধি ঘটে না।

    ৩. দাঁত দিয়ে নখ কাটলে যে শুধু নখের সমস্যাই দেখা দেয়, তা কিন্তু নয়। আপনার মুখে ও দাঁতেও সমস্যা হতে পারে।

    ৪. দাঁতে নখ কাটলে নখের মধ্যে থাকা নোংরা সরাসরি মুখে গিয়ে শরীরে প্রবেশ করবে। ফলে বাড়বে পেটের সমস্যা ও বিভিন্ন সংক্রমণ।

    ৫. যাদের দীর্ঘদিন ধরে দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস আছে, তাদের নখে ফাঙ্গাল ইনফেকশন দেখা দিতে পারে।

    ৬. এর পাশাপাশি দাঁতে নখ কাটলে নখের আঘাতে আপনার ঠোঁট, চোয়াল এইসব অংশে কেটে যেতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দাঁতের মাড়িও।

    ৭. যেহেতু দাঁত দিয়ে নখ কাটছেন তার ফলে নখ ও আঙুলের পাশাপাশি দাঁতের আশপাশে থাকা সফট টিস্যুও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

     

  • খাবারের যুগলবন্দিতে মিলবে পুষ্টি বেশি

    খাবারের যুগলবন্দিতে মিলবে পুষ্টি বেশি

    আলোরধারা ডেস্ক:

    ভিটামিন খনিজ এরকম পুষ্টি উপাদাগুলো এককভাবে যতটা বেশি ফলপ্রসু, তারচেয়ে বেশি কাজ করে যদি সঠিক সমন্বয় করা যায়।

    যেমন লৌহ ভালো মতো শোষিত হতে প্রয়োজন ভিটামিন সি। এখন তাই টক ফলের সাথে লৌহ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উপকারী।

    এই তথ্য জানিয়ে হার্ভার্ড হেল্থ পাবলিশিং’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বস্টন’য়ে অবস্থিত ‘ব্রিঘাম অ্যান্ড উইমেন’স হসপিটাল’য়ের পুষ্টিবিদ ন্যান্সি অলিভেইরা বলেন, “কারণ কিছু খাবার সমন্বিতভাবে ভালো কাজ করে। মানে, খাবারের কোনো কোনো উপাদান যৌথভাবে শরীরে কার্যকর প্রভাব রাখে।

    যেমন- একমুঠ বাদাম বা আঙুর খাওয়া উপকারী। তবে এর সাথে আরও কিছু খাবার খেতে পারলে উপকার বেশি হয়, জানান তিনি।

    মটর ও বাদামি চাল: একই সাথে আঁশ ও প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে যেকোনো ধরনের মটর বা শিম, বরবটির ও মটরশুঁটির সাথে বাদামি চালের ভাত সমন্বয় করা যায়।

    কারণ তাহলে মিলবে উপকারী নয়টি অ্যামিনো অ্যাসিড যা, পেশির গঠন ও উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। এছাড়া মটরে থাকা প্রোটিন ও আঁশ ভাতের কার্বোহাইড্রেইট হজম ধীর করে। ফলে পেটভরা অনুভূতি দেয় দীর্ঘক্ষণ।

    একই রকম উপকার পাওয়া যাবে পূর্ণ শষ্যের পাউরুটি অর্থাৎ ব্রাউন ব্রেড’য়ের সাথে পিনাট বাটার দিয়ে খেলে।

    পালংশাক ও সিট্রাস: মানে টক ধরনের ফলের সাথে শাক খাওয়া উপকারী। কারণ টক ফলের ভিটামিন সি পালংশাকে থাকা লৌহ শরীরে শোষণে কাজ করে।

    দুধের সাথে কাঠবাদাম: দুধে থাকে ভিটামিন ডি। আর কাঠবাদামে রয়েছে ক্যালসিয়াম। হজমতন্ত্রে ক্যালসিয়াম ভালো মতো শোষণের জন্য চাই ভিটামিন ডি। যে কারণে এই দুই খাবার একসাথে খাওয়া উপকারী।

    ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ অন্যান্য খাবারের মধ্যে আছে- পত্রল সবুজ সবজি, বিভিন্ন ধরনের মাছ, ডাল ও শুঁটি ইত্যাদি।

    টমেটোর সাথে অলিভ অয়েল: স্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেল শক্তিশালি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লাইকোপেন শোষণে সাহায্য করে, যা কোষের ক্ষয় পূরণ করার পাশাপাশি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

    আর লাইকোপেনের উৎস হল টমেটো। এছাড়া যে কোনো লালচে ফল ও সবজি থেকে মিলবে লাইকোপেন। যেমন- লাল ক্যাপ্সিকাম, লাল বাঁধাকপি ইত্যাদি।

    আপেল এবং পিনাট বাটার: আঁশ, প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বির সমন্বয় হতে পারে এই দুটি খাবার। তবে যে কোনো ধরনের বাদামের মাখন এই ক্ষেত্রে কাজ করবে।

    আর এই তিন উপাদান একসাথে খেতে পারলে উদরপূর্তি হয় দীর্ঘক্ষণ।

    হলুদ ও কালো গোলমরিচ: এই দুই মসলার সমন্বয়ে খাবার হয় সুস্বাদু। আর হলুদে থাকা উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কারকিউমিন ভালোমতো শোষণে সাহায্য করে কালো গোলমরিচে থাকা ‘পিপেরিন’। ফলে হলুদের প্রদাহরোধী প্রভাব বৃদ্ধি পায়।

    মাছের সাথে ব্রকলি: বাদামি চালের ভাত, সাথে মাছ ও ব্রকলির মিশ্রণ ঘটাতে পারলে পর্যাপ্ত পরিমাণে মিলবে ভিটামিন ও খনিজ।

    তবে মনে রাখতে হবে

    “কিছু খাবারের সাথে যুগলবন্দি ঘটানো যেমন উপকারী। তেমনি কয়েকটি খাবার একসাথে খাওয়া হিতে বিপরীত হতে পারে”- বলেন অলিভেইরা।

    প্রথমত পুষ্টি শোষণের বিষয়টা মানুষ ভেদে ভিন্ন হয়। মানে সকলেই যে একই খাবার খেয়ে পুষ্টি পাবেন এমন কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই।

    তাই দুয়েকটি খাবারের সমন্বয় করে খেলে শরীরে যদি না সয় তবে সেসব খাওয়া এড়াতে হবে- পরামর্শ দেন অলিভেরা।

    আবার কোনো একটি খাবার হাতের কাছে নেই বলে অন্য খাবারটি খাওয়া যাবে না এমন কোনো কথা নেই। হাতের নাগালে যে খাবারগুলো আছে সেগুলোই জোড় বাঁধিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করলে পুষ্টি মিলবে বেশি।

  • বিপদের সময়   যা বলতে  হবে

    বিপদের সময় যা বলতে হবে

    আলোরধারা ডেস্ক:

    যেকোনো ধরনের বিপদ-আপদ সামনে এলে বলা হয় ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’। বিশ্বাসীরা কেবল মুখে বলা নয়; বরং মনে মনে এ কথা স্বীকার করে নেওয়া যে আল্লাহর কর্তৃত্বাধীন। আর নিশ্চিতভাবে আমরা তাঁরই দিকে ফিরে যাব—এর অর্থ হচ্ছে, চিরকাল এ দুনিয়ায় থাকা যাবে না। একদিন আল্লাহরই কাছে যেতে হবেই।

    বিশ্বাসীরা বিপদে পড়লে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পাঠ করেন। কেউ বিপদে পড়লে যেন এ দোয়াটি পাঠ করে। একাধারে যেমন সওয়াব পাওয়া যায়, তেমনি অর্থের প্রতি লক্ষ রেখে পাঠ করা হয়, তবে বিপদের মধ্যেও শান্তি লাভ করবে বিপদ থেকে উত্তরণও সহজ হয়ে যায়।

    কোনো বিপদে বান্দার মুখে উচ্চারিত হয় এই দুটি বাক্য—এর অর্থ আল্লাহর ফয়সালা সর্বান্তঃকরণে মেনে নিচ্ছি। আর আখিরাতে বিশ্বাস করি, তাই এ বিপদে সবরের বিনিময় তাঁর কাছে প্রত্যাশা করছি। দুটি বাক্যে ইমানের মৌলিক সাক্ষ্য দেওয়া হয়। তাই এর ফজিলতও অনেক।

    সুরা বাকারার ১৫৬ নম্বর আয়াতটি কোরআন শরিফের প্রসিদ্ধ আয়াত। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। অর্থ  (তারাই ধৈর্যশীল) যারা তাদের ওপর কোনো বিপদ এলে বলে আমরা তো আল্লাহরই আর নিশ্চিতভাবে আমরা তাঁরই দিকে ফিরে যাব। কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে পড়েন। অনেকে মনে করেন, মানুষের মৃত্যুসংবাদ পেলে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পড়তে হয়। বরং ইন্না লিল্লাহ পড়ার অনেক কারণ ও গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত রয়েছে। এই পবিত্র বাক্য আল্লাহকে স্মরণ রাখার বড় উপায়।

  • বাঙালি হিন্দুদের আরেকটি জনপ্রিয় উৎসব হচ্ছে ভাইফোঁটা

    বাঙালি হিন্দুদের আরেকটি জনপ্রিয় উৎসব হচ্ছে ভাইফোঁটা

    আলোরধারা ডেস্ক:

    বাঙালি হিন্দুদের আরেকটি জনপ্রিয় উৎসব হচ্ছে ভাইফোঁটা। ভাই-বোনের মধ্যকার অনিন্দ্যসুন্দর সম্পর্ক ঘিরেই প্রচলিত হয়েছে উৎসবটি।

    প্রথা অনুযায়ী, শুক্লা তিথির দ্বিতীয়াতে ভাইফোঁটা উদ্‌যাপিত হয়। পঞ্জিকার হিসাবমতে, কালীপূজার দুই দিন পর ভাইফোঁটা অনুষ্ঠিত হয়। ‘ভ্রাতৃদ্বিতীয়া’ বা ‘ভাইফোঁটা’ উৎসব কেন করা হয়, তার পেছনে অনেক পৌরাণিক ব্যাখ্যা বা কাহিনি রয়েছে। বলা হয়ে থাকে যে কার্তিক মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে যমুনাদেবী তাঁর ভাই যমরাজের মঙ্গল কামনায় আরাধনা করেন; যার পুণ্য প্রভাবে যমদেব অমরত্ব লাভ করেন। বোন যমুনাদেবীর পূজার ফলে ভাই যমের এই অমরত্ব লাভের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বর্তমানকালের বোনেরাও এই সংস্কার বা ধর্মাচার পালন করে আসছেন।

    ভিন্ন এক কাহিনিমতে, একদা প্রবল পরাক্রমশালী বলির হাতে বিষ্ণু পাতালে বন্দী হন। দেবতারা পড়েছেন মহাবিপদে। কারণ, কোনোমতেই তাঁরা নারায়ণকে বলির কবল থেকে বের করে আনতে পারছেন না। শেষ পর্যন্ত এগিয়ে এলেন স্বয়ং লক্ষ্মী। তিনি বলিকে ভাই হিসেবে স্বীকার করেন। সেই উপলক্ষে তাঁর কপালে তিলক এঁকে দেন। ভ্রাতৃত্বের বন্ধন স্বীকার করে বলি লক্ষ্মীকে উপহার দিতে চাইলে লক্ষ্মী চেয়ে নেন ভগবান বিষ্ণুকে। সেই থেকেই ভাইফোঁটা উৎসবের সূচনা।

    আরেক সূত্রমতে, এদিনে নরকাসুর নামের এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তাঁর বোন সুভদ্রার কাছে আসেন, তখন সুভদ্রা তাঁর কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন হয়। ভাইফোঁটা, এদিন ভাইয়ের কপালে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে বোনেরা বলেন, ‘ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা/ যমের দুয়ারে পড়ল কাটা/ যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা/ আমি দিই ভাইফোঁটা।’

    এসব পৌরাণিক ব্যাখ্যা বা কাহিনি যা–ই থাকুক না কেন, বর্তমানে ভাইফোঁটা একটি সামাজিক উৎসব। এই উৎসবে পারিবারিক সম্পর্কগুলো আরও পোক্ত হয়। তাই ভাইফোঁটার ধর্মীয় গুরুত্ব অপেক্ষা সামাজিক ও পারিবারিক গুরুত্ব অনেক বেশি, যেখানে ভাইবোনের মধ্যকার প্রীতি ও ভালোবাসার সম্পর্কটিই মুখ্য।

    আমরা সামাজিক জীব। আমাদের সমাজ তৈরি হয় প্রথমে ঘর থেকে। মা-বাবা, ভাই-বোন দিয়ে যে পরিবার শুরু হয়, সেই পরিবারটিই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আত্মীয়তার বন্ধন বিস্তৃত করে, ঘর থেকে বেরিয়ে প্রতিবেশী, প্রতিবেশী পেরিয়ে পাড়া, গ্রাম ছাড়িয়ে একদিন সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়ে।