সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় বাড়ছে দিন দিন চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। এদিকে একের পর এক নানা অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড ঘটলেও এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অভিযোগ হলেও তদন্তে করতে গাফিলতি করছে বলে অভিযোগ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
সিদ্ধিরগঞ্জে নাসিকের ১ থেকে ১০ নং ওয়ার্ডে হরহামেশাই ঘটছে ছিনতাই ও বাড়িঘরে চুরি সহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। প্রায় প্রতিদিনই থানা এলাকা অধীনস্থ কোন না কোন স্থানে প্রতিনিয়ত চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে চলেছে। এদিকে চুরি ও ছিনতাইয়ের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
গত জানুয়ারি মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় চুরি, ছিনতাইয়ের অভিযোগ হয়নি জানান সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনুর আলম। তা হলে এই থানা এলাকায় চুরি, ছিনতাই হয় না? ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চুরি, ছিনতাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হলেও খাতা কলম পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে, এই অভিযোগ হলেও তদন্ত করতে গাফিলতি করছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। আবার অভিযোগের তদন্ত করতে গেলেও গাড়ির তেল খরচ বা চা,নাস্তা বাবদ দিতে হয় তদন্তকারীকে দিতে মোটা অংকের টাকা।
এই চুরি ছিনতাইয়ের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ লোক দেখানো অভিযান দেখিয়ে কিছুসংখ্যক ছিনতাইকারী ধরলেও তাও আবার বিশেষ তকদিরে বা মোটা অংকের ঘুষ বানিজ্য করে ছেড়ে দেয় থানার ওসি, ওসি তদন্ত, ওসি আপারেশন, সেকেন্ড আফিসার ও এসআইরা। লোক দেখানো অভিযানে কিছু সংখ্যক চোর, ছিনতাইকারী ধরা পড়লেও হর্তাকর্তারা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এই হর্তাকর্তারা থানার বুবুদের সাথে সখ্যাতা দেখা যায় ভালো।
এদিকে পুলিশের ভাষ্য, তাদের নিয়মিত অভিযানে গ্রেপ্তার হচ্ছে পেশাদার ছিনতাইকারী এবং চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধারেও কাজ চলছে।
একদিকে অর্থ সংকটের কারণে জনজীবনে স্বস্তি নেই বললেই চলে। অপরদিকে কর্মব্যস্ত মানুষেরা কর্মস্থলে গিয়ে কাজ শেষে বাসায় ফিরে দেখেন ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বা টাকা-পয়সা নেই। যা মধ্যবিত্তের জন্যে যন্ত্রণাদায়ক বলে জানিয়েছেন নাসিক ৩নং ওয়ার্ডের ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী পারভেজ।
তিনি জানান, প্রতিদিনের মতো গত ১০ সেপ্টেম্বর তার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান পারভেজ। তিনি কাজ রাতে বাসায় ফিরে দেখেন তার ঘরের দরজার তালা ভাঙা। পরে ঘরে প্রবেশ করেই জানতে পারেন নগদ টাকা, সোনার আলংকার মোবাইল ফোন নেই।
চুরি ছিনতাই জোন হিসাবে ভালো পরিচিতস্থান গুলো হলো, নাসিক ৩ নম্বর ওযার্ডের বটতলা এলাকার মাজাররোড, কানাপট্্ির, রসূলবাগের একঅংশ, নিমাই কাশারী-বাঘমারা সীমানা অংশে, পশ্চিম সানারপাড় বালুর মাঠ, কোরেশ গারমেন্টর্স, আলামিন গারমেন্টর্স, মাধানীনগর মেইন রাস্তায়, পুরাতন টায়ার মার্কেট, বিক্ররাম আবাসিক হোটেলের, খানাকায় মসজিদের, আন্তজেলা ট্্রাক ষ্টন্ড্যা, সাজেদা হাসপাতাল, কাঁচপুর ব্রীজের নিচে, ল্যান্ডিন ষ্ট্যান্ড, ওয়াকওয়ে, বিদুৎ আফিস, শিমরাইল মোড়, আহসান উল্লাহ মার্কেট, দশতলা, বেঙ্গল কারখানা, ধনুহাজী মেইন রাস্তার মাথায়, মৌচাক ষ্ট্যান্ড, সানারপার দুই পাশের ষ্ট্যান্ড, মাহিন লেবেল কারখানার, পিডিকে পাম্পে, প্রেআ্যাক্টিভ হাসপাতাল, সাইনবোর্ড মোড়ের দুই পাশে, আদমজী ইপিজেড, কদমতলী ষ্ট্যান্ড, নাভানা, ২নং ঢাকেরস্বরী ষ্ট্যান্ড, জালকুড়ি করইতলা, জলকুড়ি দশপাইপ, পাগলাবাড়ী, সিআইখোলা কাঠের পুল এলাকায়, এসব স্থান গুলো চুরি, ছিনতাইয়ের হট স্পট হলেও কোন নজরদারি নেই সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের বলছে এলাবাসী।
এদিকে ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ যেনো নিত্যদিনের কর্মে পরিণত হয়েছে ছিনতাইকারীদের জন্য। রাত গভীর হলেই আতঙ্কের অপর নাম তারা। গার্মেন্টস কর্মী, দিনমজুর, রিকশা চালকরাই ভুক্তভোগী বেশি।
আদমজী ইপিজেডের অপরপাশে ডিএনডি লেকের সামনে ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া গার্মেন্টস কর্মী কোহিনুর বলেন, গত বুধবার রাতে বাসায় ফেরার পথে তিনজন অল্পবয়সী তরুণ তাকে আটকে সুইচ গিয়ার (চাকু) ঠেকিয়ে তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এদিকে ১২ আগস্ট রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দেশীয় অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাইকালে ৪ জনকে হাতেনাতে আটক করেছিল হাইওয়ে পুলিশ।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনুর আলম বলেন,আমরা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে অনেক ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। দিবারাত্রি আমাদের থানা পুলিশের টিম টহল দেন এলাকাজুড়ে।