সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের এক দম্পতি তাদের একমাত্র মেয়ে আরিবাহ্ ইসলামের প্রথম জন্মদিনকে স্মরণীয় করে রাখতে তাঁরা বেছে নিয়েছেন প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের এক অনন্য পথ।তাই তারা বৃক্ষরোপণ করে জন্মদিন পালন করেন। এই ঘটনা নারায়ণগঞ্জ সহ বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে এবং অন্যান্য মানুষদের বৃক্ষ রোপনের প্রতি উৎসাহিত করেছে। সচরাচর আমরা জানি
জন্মদিন মানেই আনন্দ, উচ্ছ্বাস, কেক কাটা আর প্রিয়জনদের নিয়ে হইচই-এই চিরাচরিত ধারণাকে ভেঙে সম্পূর্ণ এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন নারায়ণগঞ্জের এই দম্পতি। ভালোবাসা প্রকাশের এক অনন্য পথ।এই ঘটনা নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিয়ার নজরে আসলে তিনি তাদেরকে আরো অনুপ্রেরণা ও উৎসাহিত করার জন্য তার কার্যালয়ে ডেকে এনে বলেন আমার জীবনে এই প্রথম দেখলাম কারো জন্মদিনে কেক না কেটে আনন্দ উৎসব না করে বৃক্ষ রোপন করে আনন্দিত হতে। এইজন্য ওই দম্পতিকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানান জেলা প্রশাসক এবং জেলা প্রশাসকের চেম্বারে ওই বাচ্চাটি ও তার পরিবারকে সাথে নিয়ে কেক কাটেন ও উপহার প্রদান করেন। আরো বলেন আপনারা গ্রীন এন্ড ক্লিন নারায়ণগঞ্জ এর বাস্তবায়নের অংশীদার হিসাবে বৃক্ষরোপণ করায় আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।
আনন্দ-উৎসবের পরিবর্তে তারা তাদের ছোট্ট রাজকন্যার প্রথম জন্মদিনকে রাঙিয়ে তুলেছেন সবুজে। জমকালো পার্টি বা হইচইয়ের আয়োজন না করে, তাঁরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে আয়োজন করেন এক ব্যতিক্রমী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে তাঁরা একে একে রোপণ করেছেন বেশ কিছু চারাগাছ। এই সবুজ উদ্যোগের মধ্য দিয়ে তারা শুধু মেয়ের জন্মদিনই উদযাপন করেননি, বরং দিয়েছেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক সুন্দর বার্তা।
এই প্রসঙ্গে মেয়ের মা আসমাউল হুসনা বলেন, ‘গাছ আমাদের পরম বন্ধু। নিঃস্বার্থভাবে তারা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু দান করে। আমরা চাই, আমাদের মেয়েও যেন এমনিভাবে নিঃস্বার্থভাবে সমাজ ও দেশের কল্যাণে কাজ করে। এই ভাবনা থেকেই আমাদের এই উদ্যোগ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, আমাদের মেয়ের সঙ্গে সঙ্গে এই গাছগুলোকেও বেড়ে উঠতে দেখব। ও বড় হবে, আর এই গাছগুলো হয়ে উঠবে ওর শৈশবের অন্যতম সাক্ষী।’
এই ধরনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ বর্তমান সমাজে নিঃসন্দেহে এক প্রশংসনীয় দৃষ্টান্ত। এটি শুধু একটি জন্মদিন উদযাপনই নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সবুজ ও শান্তিপূর্ণ পৃথিবীর বার্তাও বহন করে। এই উদ্যোগ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রকৃত আনন্দ শুধুমাত্র ভোগে নয়, বরং সৃষ্টি আর ত্যাগের মধ্যেও নিহিত।