আলোরধারা ডেস্ক:
ভিটামিন খনিজ এরকম পুষ্টি উপাদাগুলো এককভাবে যতটা বেশি ফলপ্রসু, তারচেয়ে বেশি কাজ করে যদি সঠিক সমন্বয় করা যায়।
যেমন লৌহ ভালো মতো শোষিত হতে প্রয়োজন ভিটামিন সি। এখন তাই টক ফলের সাথে লৌহ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উপকারী।
এই তথ্য জানিয়ে হার্ভার্ড হেল্থ পাবলিশিং’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বস্টন’য়ে অবস্থিত ‘ব্রিঘাম অ্যান্ড উইমেন’স হসপিটাল’য়ের পুষ্টিবিদ ন্যান্সি অলিভেইরা বলেন, “কারণ কিছু খাবার সমন্বিতভাবে ভালো কাজ করে। মানে, খাবারের কোনো কোনো উপাদান যৌথভাবে শরীরে কার্যকর প্রভাব রাখে।
যেমন- একমুঠ বাদাম বা আঙুর খাওয়া উপকারী। তবে এর সাথে আরও কিছু খাবার খেতে পারলে উপকার বেশি হয়, জানান তিনি।
মটর ও বাদামি চাল: একই সাথে আঁশ ও প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে যেকোনো ধরনের মটর বা শিম, বরবটির ও মটরশুঁটির সাথে বাদামি চালের ভাত সমন্বয় করা যায়।
কারণ তাহলে মিলবে উপকারী নয়টি অ্যামিনো অ্যাসিড যা, পেশির গঠন ও উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। এছাড়া মটরে থাকা প্রোটিন ও আঁশ ভাতের কার্বোহাইড্রেইট হজম ধীর করে। ফলে পেটভরা অনুভূতি দেয় দীর্ঘক্ষণ।
একই রকম উপকার পাওয়া যাবে পূর্ণ শষ্যের পাউরুটি অর্থাৎ ব্রাউন ব্রেড’য়ের সাথে পিনাট বাটার দিয়ে খেলে।
পালংশাক ও সিট্রাস: মানে টক ধরনের ফলের সাথে শাক খাওয়া উপকারী। কারণ টক ফলের ভিটামিন সি পালংশাকে থাকা লৌহ শরীরে শোষণে কাজ করে।
দুধের সাথে কাঠবাদাম: দুধে থাকে ভিটামিন ডি। আর কাঠবাদামে রয়েছে ক্যালসিয়াম। হজমতন্ত্রে ক্যালসিয়াম ভালো মতো শোষণের জন্য চাই ভিটামিন ডি। যে কারণে এই দুই খাবার একসাথে খাওয়া উপকারী।
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ অন্যান্য খাবারের মধ্যে আছে- পত্রল সবুজ সবজি, বিভিন্ন ধরনের মাছ, ডাল ও শুঁটি ইত্যাদি।
টমেটোর সাথে অলিভ অয়েল: স্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেল শক্তিশালি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লাইকোপেন শোষণে সাহায্য করে, যা কোষের ক্ষয় পূরণ করার পাশাপাশি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
আর লাইকোপেনের উৎস হল টমেটো। এছাড়া যে কোনো লালচে ফল ও সবজি থেকে মিলবে লাইকোপেন। যেমন- লাল ক্যাপ্সিকাম, লাল বাঁধাকপি ইত্যাদি।
আপেল এবং পিনাট বাটার: আঁশ, প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বির সমন্বয় হতে পারে এই দুটি খাবার। তবে যে কোনো ধরনের বাদামের মাখন এই ক্ষেত্রে কাজ করবে।
আর এই তিন উপাদান একসাথে খেতে পারলে উদরপূর্তি হয় দীর্ঘক্ষণ।
হলুদ ও কালো গোলমরিচ: এই দুই মসলার সমন্বয়ে খাবার হয় সুস্বাদু। আর হলুদে থাকা উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কারকিউমিন ভালোমতো শোষণে সাহায্য করে কালো গোলমরিচে থাকা ‘পিপেরিন’। ফলে হলুদের প্রদাহরোধী প্রভাব বৃদ্ধি পায়।
মাছের সাথে ব্রকলি: বাদামি চালের ভাত, সাথে মাছ ও ব্রকলির মিশ্রণ ঘটাতে পারলে পর্যাপ্ত পরিমাণে মিলবে ভিটামিন ও খনিজ।
তবে মনে রাখতে হবে
“কিছু খাবারের সাথে যুগলবন্দি ঘটানো যেমন উপকারী। তেমনি কয়েকটি খাবার একসাথে খাওয়া হিতে বিপরীত হতে পারে”- বলেন অলিভেইরা।
প্রথমত পুষ্টি শোষণের বিষয়টা মানুষ ভেদে ভিন্ন হয়। মানে সকলেই যে একই খাবার খেয়ে পুষ্টি পাবেন এমন কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই।
তাই দুয়েকটি খাবারের সমন্বয় করে খেলে শরীরে যদি না সয় তবে সেসব খাওয়া এড়াতে হবে- পরামর্শ দেন অলিভেরা।
আবার কোনো একটি খাবার হাতের কাছে নেই বলে অন্য খাবারটি খাওয়া যাবে না এমন কোনো কথা নেই। হাতের নাগালে যে খাবারগুলো আছে সেগুলোই জোড় বাঁধিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করলে পুষ্টি মিলবে বেশি।