রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় টেস্ট ড্রাইভের কথা বলে একটি টয়োটা হ্যারিয়ার জিপ গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় আহসান আহমেদ ওরফে মাসুম (৩৬) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ডিএমপি।
সোমবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটায় গুলশানের ৪১ নম্বর রোডের ‘আমারই ঢাকা’ হোটেলের সামনে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা পুলিশ।
এ সময় ছিনতাই হওয়া জিপ গাড়িটি উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি ৫ রাউন্ড গুলি ও ম্যাগাজিনসহ একটি বিদেশি পিস্তল এবং তিনটি মোবাইল ফোন জব্দ করেন পুলিশ সদস্যরা।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম।
তিনি জানান, পরীবাগ গার্ডেন টাওয়ারে অবস্থিত ‘হইল ডিলস (বারভিডা- ১৭৯১)’ নামের একটি গাড়ির শো-রুমের স্বত্বাধিকারী মাশরুর নাঈর (২৯) জাপানিজ গাড়ির একজন আমদানিকারক ও ডিস্ট্রিবিউটর।
গত ৭ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টায় অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তি ফোন করে টয়োটা হ্যারিয়ার জিপ গাড়ি কেনার জন্য মাশরুর নাঈরের সঙ্গে কথা বলেন। কথাবার্তার এক পর্যায়ে মাশরুর নাঈর সেই ব্যক্তিকে তার বাসার গ্যারেজে গাড়ি দেখার জন্য আসতে বলেন।
পরদিন ৮ মার্চ রাত পৌনে ৮টার দিকে সেই ব্যক্তি বাসার গ্যারেজে আসেন এবং গ্যারেজের বাইরে আরও দুজন অবস্থান করেন। পরে একটি টয়োটা হ্যারিয়ার জিপ গাড়ি টেস্ট ড্রাইভ দেওয়ার জন্য মাশরুর নাঈরের চাচাত ভাই মো. পিয়াল মাহমুদকে নিয়ে সেই অজ্ঞাতনামা তিনজন ব্যক্তি গাড়িটিতে ওঠেন। তারা গাড়িটি চালিয়ে রাত আনুমানিক সোয়া ৮টার সময় শাহবাগ থানাধীন পিজি হাসপাতালের সামনে মেট্রোরেল স্টেশনে আসেন। তখন গাড়িটি থামিয়ে তাদের একজন পিয়াল মাহমুদের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে গাড়িটি নিয়ে চলে যান। জিপ গাড়িটির আনুমানিক মূল্য ৮৫ লাখ টাকা।
ডিসি মাসুদ আলম আরও জানান, ঘটনার কিছুক্ষণ পর ছিনতাইকারীরা মাশরুর নাঈরের হোয়াটসঅ্যাপে একটি বার্তা দিয়ে মামলা না করতে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি না জানানোর জন্য হুমকি দেয়। এ ঘটনায় গাড়ির মালিক মাশরুর নাঈরের অভিযোগের ভিত্তিতে শাহবাগ থানায় গত ৯ মার্চ একটি মামলা করা হয়।
মামলাটি তদন্তকালে তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করা হয়। এরপর সোমবার (২৪ মার্চ) রাত সোয়া তিনটায় গুলশান থানার ৪১ নম্বর রোডের আমারই ঢাকা নামের হোটেলের সামনে অভিযান পরিচালনা করে আহসান আহমেদ ওরফে মাসুমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আহসান আহমেদ জানিয়েছেন, তিনি বুয়েটের একজন সাবেক শিক্ষার্থী এবং প্রযুক্তির ব্যবহারে অত্যন্ত দক্ষ। তিনি একজন পেশাদার অপরাধী। এর আগে ছিনতাইসহ এরকম বহু অপরাধে তিনি জড়িত ছিলেন। গাড়ি ছিনতাই করে নিয়ে পরে গাড়ির মালিকদের কাছে গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলে অর্থ দাবি করতেন মাসুম। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় গাড়ি ছিনতাইয়ের একাধিক মামলা রয়েছে।



















