সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বিএনপির রাজনীতিতে আবারও বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন সাবেক নেতা রেজাউল করিম। গত ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস কেন্দ্রীয়ভাবে পালিত হলেও, রেজাউল করিম ব্যক্তিগত স্বার্থে কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করে ১০ নভেম্বর বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিশাল গাড়িবহর ও মোটরসাইকেল শোডাউন বের করেন। এতে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে হাজারো যাত্রী ও স্থানীয়দের তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হয়।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই শোডাউন শুধু দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি অবজ্ঞাই নয়, বরং দলের মনোনীত প্রার্থীকে বিতর্কিত করার একটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা।
বিশ্লেষকরা প্রশ্ন তুলেছেন — “যে নেতার কাছে মাত্র তিন দিন আগে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নান দেখা করে সঙ্গে দেখা করে দোয়া নিয়েছিলেন এবং তিনিই ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, হঠাৎ করে তিনি কেন দলীয় শৃঙ্খলা ভেঙে ব্যক্তিগত প্রদর্শন করেন
উল্লেখ্য, গত ৭ নভেম্বর রাতে আজহারুল ইসলাম মান্নান নিজেই রেজাউল করিমের বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সেখানে পারস্পরিক শুভেচ্ছা বিনিময় হয়, এবং রেজাউল করিম তখন ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ১০ নভেম্বর বিকেলে তিনি গাড়িবহর নিয়ে মহাসড়কে শোডাউন দেন— যা অনেকের চোখে সেই প্রতিশ্রুতির সুস্পষ্ট বিরোধিতা।
একজন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন,রেজাউল করিমের এই আচরণ কোনোভাবেই দলীয় ঐক্যের প্রতিফলন নয়। এটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতির এক অনাকাঙ্ক্ষিত নমুনা, যা বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
আরেকজন স্থানীয় ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাজনীতি হোক জনগণের জন্য, কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে মহাসড়ক বন্ধ করে নিজের প্রচারই বড় বিষয়। এতে জনগণ যেমন ভোগান্তিতে পড়ছে, তেমনি দলের ভাবমূর্তিও নষ্ট হচ্ছে।

এদিকে সাধারণ মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, একদিকে ঐক্যের কথা, অন্যদিকে বিভাজনের কাজ। রেজাউল করিমের এই দ্বিচারিতা বিএনপির অগ্রযাত্রায় বড় বাধা।
রাজনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ, এই ঘটনার মাধ্যমে রেজাউল করিম আবারও প্রমাণ করেছেন যে তিনি ব্যক্তিগত প্রচারণা ও প্রভাব বিস্তারের রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে পারেননি। ফলস্বরূপ, সোনারগাঁয়ের বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত প্রশ্ন থেকেই যায়, ঐক্যের প্রতিশ্রুতির পরও কেন এমন বিভেদ সৃষ্টিকারী প্রদর্শন? রাজনীতির মাঠে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু সেই প্রশ্নই।
সোনারগাঁ প্রতিনিধি



















