নিষেধাজ্ঞা শেষে গত শনিবার মধ্যরাত থেকে পরবর্তী দুই দিন জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছিল। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যা থেকে নদী ও সাগরের মোহনায় সেই কাঙ্ক্ষিত ইলিশ আহরণে আবার আকাল পড়েছে। এতে মেঘনার মৎস্যজীবীরা জাল-বোট তুলে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
নোয়াখালীর উপকূলীয় এলাকা হাতিয়ার কাজির বাজার, সূর্যমুখী, দানার দোল এবং রহমত বাজার ঘাটের জেলে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে মৎস্য আহরণের এই হালচাল জানা যায়।
আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে হাতিয়ার কাজির বাজার মৎস্য ঘাটে দেখা যায়, মেঘনা ও সাগরের মোহনা থেকে মাছ শিকারি জেলেরা খুব কমসংখ্যক ইলিশ নিয়ে ফিরেছেন। গতকাল সন্ধ্যার সময়ও মাছের অবস্থা এমন ছিল বলে জানান তারা। এ অবস্থায় তাদের খরচের সাথে পুষিয়ে না ওঠায় জাল-বোট তুলে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
দীর্ঘ ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর জেলে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে ঘাট এলাকা মুখরিত হয়ে উঠলেও গতকাল বিকেল থেকে তাতে আবার ভাটা পড়তে দেখা যায়।
কাজির বাজার মৎস্য ব্যবসায়ী নাজিম জানান, এ বছর নিষেধাজ্ঞা সঠিক সময়ে দেওয়া হয়নি। তবুও নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী দুই দিন সাগরে বেশ পরিমাণ মাছ পড়েছিল। এতে দামও মোটামুটি কম ছিল। এখন আবার জেলেদের জালে মাছ কম পড়ায় তাঁদের অনেকে জাল তুলে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সূর্যমুখী ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী আজিম উদ্দিনও একই বিষয় জানিয়ে বলেন, গতকাল বিকেল থেকে নদীতে মাছ খুব কম লাগছে। এতে বোটের মালিক ও জেলেদের খরচ পুষিয়ে ওঠা যাচ্ছে না।
এদিকে, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান পরবর্তী গত দু’দিনে মেঘনায় যে পরিমাণ মাছ ধরা পড়ছিল, তাতে দামও ছিল সহনীয়। ৫০০ গ্রাম ওজনের প্রতি পন (৮০টি বা এক মণ) ইলিশ ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। ১ কেজি ওজনের পন (৮০টি বা এক মণ) প্রতি এক লাখ ২০ হাজার থেকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। এছাড়া, আজ সকালে স্থানীয় জামসেদ মাঝির জালে ২ কেজি ৪০০ গ্রামের একটি ইলিশ ধরা পড়লে তা ৪ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
নোয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন জানান, গত রাতে পূর্ণিমার জো শেষ হয়েছে, তাই নদী-সাগরের মোহনায় আপাতত মাছের দেখা মিলবে না। তবে আগামী কিছুদিন পর আবার যথারীতি মাছ পাওয়া যাবে।