নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জসহ রাজধানী ও আশপাশের রুটে চলাচলকারী বিআরটিসি আর্টিকুলার বাসগুলো এখন যাত্রী ভোগান্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে। যাত্রী সেবার পরিবর্তে এসব বাসের অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম আর দুর্নীতিই প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, অধিকাংশ বাসের সিট ভাঙা, অনেক সিট রশি দিয়ে টেনে রাখা হয়েছে। বাসের মেঝেতে বড় বড় ছিদ্র হয়ে গেছে, ছাদ দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে ভিজে যায় যাত্রী ও মালপত্র। চলাচলের অনুপযোগী হয়েও এসব বাস প্রতিদিন রাস্তায় নামানো হচ্ছে, যা যাত্রীদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, বাসের ফ্যান-লাইট খুলে ফেলা হয়েছে, ফলে গরমে যাত্রীদের নাভিশ্বাস উঠছে। তবুও ভাড়ায় কোনো ছাড় নেই। বরং যাত্রীসেবার নামে কর্তৃপক্ষ বাড়তি ভাড়া চাপিয়ে দিচ্ছে। যাত্রীদের মতে, “ভাঙাচোরা বাসে চড়া ভাড়া দিয়ে ভ্রমণ করতে হচ্ছে—এ যেন এক অমানবিক নির্যাতন।” অভিযোগ উঠেছে, বিআরটিসির রাজস্ব আদায়ে চলছে অতি মাত্রার চাপ। লিজ পার্টিগুলোকে অমানবিকভাবে জুলুমের শিকার হতে হচ্ছে। বাস পরিচালনার দায়ভার যারা বহন করছে, তাদের উপর অবৈধ রাজস্ব আদায়ের কারণে যাত্রী সেবা আরো অবনতির দিকে যাচ্ছে।
ভুক্তভোগী যাত্রীরা বলছেন, সরকারিভাবে পরিচালিত বিআরটিসির এ চিত্র হতাশাজনক। যাত্রীসেবা নিশ্চিত করার কথা থাকলেও প্রতিদিন তারা হয়রানি, ভোগান্তি আর নিরাপত্তাহীনতার শিকার হচ্ছেন। মেঝেতে যেভাবে ভেঙ্গে গেছে পায়ের চাপে যেকোন সময় যাত্রীরা বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা করছে।
ঢাকাগামী যাত্রী রবিউল আউয়াল অভিযোগ করে বলেন, আমি প্রতিদিন মায়ার বাড়ি ষ্টেশন থেকে কুড়িল যাই একটু বৃষ্টি হলেই ছাদ দিয়ে পানি পড়ে, কোন কোন সিটের নিচ দিয়ে রাস্তার ময়লা চাকার মাধ্যমে গাড়ির ভিতরে এসে যায়, এতে করে পড়নের পোষাক নষ্ট হয়ে যায়। একটু রোদ্রে রাস্তার ধুলা বালিতে একাকার হয়। তাছাড়া বেশির ভাগ ফ্যান নষ্ট থাকায় গাদাগাধি করে যাতায়াতের কারনে গরমে অতিষ্ট হয়ে যেতে হয়। সিটের অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে চলে এসব বিআরটিসি বাস। অনেক যাত্রী ভাঙ্গা সিটের কারনে বসে না গিয়ে দাড়িয়ে গন্তব্যে যেতে হয়।
বিআরটিসি আর্টিকুলার বাসের অব্যবস্থাপনা নিয়ে কথা হয় ট্রাফিক ইনিষ্পেক্টর আমির হোসেন এর সাথে তিনি বলেন, কিছু বাস ভাঙ্গা এবং সংস্কার প্রয়োজন এটা আমরাও জানি কিন্তু ডিপো গাজিপুর হওয়াতে আমরা সময়মত মেরামত করতে চাইলেও পারি না। তবে কিছু গাড়ি মেরামতের জন্য ডিপোতে নেয়া হয়েছে, সেগুলো চলাচলের উপযোগী করে রাস্তায় দিতে পারলে আরো কিছু বাস আগামী কিছু দিনের মধ্যে মেরামতের জন্য ডিপোতে নেয়া হবে। তখন সমস্যা কিছুটা লাগব হবে।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ হয়, বিআরটিসি গাজীপুর ডিপো ম্যানেজার খাইরুল ইসলামের সাথে তিনি বলেন, আমরা কিছু বিষয়ে প্রতিবন্ধকতার মধ্যে আছি, সরকার যে পরিমান বাজেট দেয় তা দিয়ে আমরা কুলিয়ে উঠতে পারি না। তবে কিছু বাসের মেরামত চলছে, আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিক্তিতে আরো কিছু বাসের মেরামত করবো। তবে যাত্রীসেবার মান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, যাত্রীসেবার মান বাড়াতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। শতভাগতো আর সম্ভব নয়,তবে আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি।
রূপগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ মোঃ আবু কাওছার মিঠু