সোনারগাঁ(নারায়ণগঞ্জ)প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে চাঁদাবাজি সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার পর চাঁদাবাজির ঘটনা ঢাকতে তড়িঘড়ি করে সংবাদ সম্মেলন করলেন সোনারগাঁ যুবদলের বিতর্কিত যুগ্ম আহবায়ক আশরাফ প্রধান।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ” সোনারগাঁয়ে দুই যুবদল নেতার চাঁদা’র টার্গেট মাসে কোটি টাকা” এ শিরোনামে প্রকাশ হলে পুরো নারায়ণগঞ্জসহ কেন্দ্রীয় যুবদল নেতাদের দৃষ্টিগোচর হয়। এতে আশরাফ প্রধান’কে নিয়ে পুরো জেলায় সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংবাদ ভাইরাল হলে মুহুর্তেই যুবদলের এ নেতা’র অপকর্মের তথ্য তুলে ধরেন স্থানীয় এলাকাবসী৷ এতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি ও যুবদলের নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ প্রকাশের পর চাঁদাবাজির ঘটনা ঢাকতে তড়িঘড়ি করে নামে মাত্র সংবাদ সম্মেলন করেন বিতর্কিত এই যুবদল নেতা। এ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঠিক তথ্য না দিয়ে মনগড়া কিছু তথ্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় এলাকাবসী।
সংবাদ সম্মেলনের বরাত দিয়ে এলাকাবাসী আরও অভিযোগ করেন যুবদল নেতা আশরাফ প্রধান কি এমন নেতা হয়েছে? সে বলে বিএনপির একটি গ্রুপকে নেতৃত্ব দেন৷ তাহলে কি বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের মূল কারিগর যুবদলের এই নেতা? এছাড়াও তিনি স্থানীয় বিএনপির ১৭ বছরে রাজপথে থাকা একাধিক নেতাকর্মীদের বিতর্কিত করতে নিজেই স্বীকার করে বলেন তারা নাকি তাদের দুই ভাইকে দুটি শিল্প প্রতিষ্ঠান দিয়েছেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে এমন বিতর্কিত বক্তব্যে পুরো জেলায় যুবদলের এ নেতাকে নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
যুবদল নেতা আশরাফ প্রধান কৌশলে চাঁদাবাজির ঘটনাটি অস্বীকার করলেও মেঘনাঘাটের একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান দখলদারিত্ব স্বীকার করে বলেন বিএনপি করার জন্য তাকে ও তার ভাই আ’লীগ নেতা ও ছাত্র হত্যার আসামী শাহাবুদ্দিনকে দুইটি কোম্পানি দিয়েছে৷ ‘মাগুরা’ গ্রুপের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকায় ওই শিল্প প্রতিষ্ঠান তাকে দিয়েছে। ‘আনন্দ শিপিয়ার্ড’ তার বাবা জন্মলগ্ন থেকে বসিয়েছে তাই তার দখলে। ‘স্যামসাং’নামে বিদেশী কোম্পানিটি দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান,তার ম্যানপাওয়ারের লাইসেন্স, এলজিআরডি লাইসেন্স, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লাইসেন্স,গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের লাইসেন্স ও বিআরটিসির লাইসেন্স আছে। অতএব সে লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ী তাই তারা তাকে দায়িত্ব দিয়েছে বলেও তিনি দাবী করেন। এছাড়া অন্যান্য কোম্পানির দখলের কোনো সদত্তোর পাওয়া যায়নি৷
মেঘনা নিউটাউন মসজিদ ও বাজার থেকে চাঁদা নেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে সে একটি নামসর্বস্ব হিসেবের খাতা দেখিয়ে বলে এ খাতায় সব হিসেবে আছে কে কতোটাকা দেয়। তবে মসজিদ মার্কেট ও বাজার কমিটির কোনো সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও তার কাছে কেনো হিসেব থাকে এ প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান৷
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, যুবদলের নাম ভাঙ্গিয়ে তিনি বিভিন্ন ভালো মানুষের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ট্যাগ দিচ্ছে। যেনো তারা ভয়ে তার অধিনস্থ হয়ে কাজ করে। তার কথামতো না চললেই সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ফেক আইডি খুলে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মনগড়া কথাবার্তা লিখে অপপ্রচার চালিয়ে তাদের সুনামক্ষুন্য করে। এছাড়া বাজার ও মসজিদ মার্কেটের টাকা মাদ্রাসায় প্রতিমাসে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেয়ার কথা থাকলেও ২ মাস ৬০ হাজার টাকা করে দিয়েছে। তারপর থেকে তিনি নিজেই সে টাকা নিচ্ছে আর মাদ্রাসায় দেয় নি। সেই দুই মাসের রিসিটই সংবাদ সম্মেলনে দেখিয়েছে।
যুবদলের এ নেতার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে বিএনপি ও যুবদলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলেও অভিযোগ করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবী করেন তৃণমূল বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ