গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ৪ কার্যদিবসের মধ্যে ৩ কার্যদিবসেই ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। এতে সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে বেড়েছে মূল্যসূচক। সেইসঙ্গে বেড়েছে বাজার মূলধন। এর মাধ্যমে টানা ৮ সপ্তাহ পতনের পর শেয়ারবাজারে মূল্যসূচক বেড়েছে। তবে লেনদেন তলানিতে নেমেছে।
গত সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার ওপরে। আর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ৭০ পয়েন্টের ওপরে বা দেড় শতাংশের বেশি। দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২০০-এর বেশি প্রতিষ্ঠান। তবে দৈনিক গড় লেনদেন কমে আড়াইশ কোটি টাকার নিচে নেমেছে।
এর আগে গত ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদের পর থেকে শেয়ারবাজারে টানা ৮ সপ্তাহ দরপতন হয়। টানা ৮ সপ্তাহের পতনে ডিএসইর বাজার মূলধন কমে ২৬ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। আর প্রধান মূল্যসূচক কমে ৫৮২ পয়েন্ট।
এমন টানা পতনের পর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২২৯টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৬১টির। আর ১০৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ দাম কমার তুলনায় দাম বাড়ার তালিকায় দ্বিগুণের বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৫০ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৩ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা বা দশমিক ৫৬ শতাংশ।
বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি গত সপ্তাহে প্রধান মূল্যসূচকও বেড়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে বেড়েছে ৭১ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১৪৭ দশমিক ২০ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ১৭ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩৫ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ।।
আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৩২ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৪৭ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের গতিও কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৪১ কোটি ১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ২৬৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ২২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বা ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৮ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফাইন ফুডস।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, মিডল্যান্ড ব্যাংক, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, ওরিয়ন ইনফিউশন, বিচ হ্যাচারি, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট এবং কেডিএস অ্যাকসেসরিজ।


















