আসন্ন ঈদুল আজহার ছুটিতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁ উপজেলার ঘরমুখো মানুষ জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। অস্থায়ী কর্মজীবী মানুষ ঈদযাত্রায় নিজেদের নিরাপদ রাখতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছেন। অনেকে ছুটিতে গ্রামে না যাওয়ারও সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, ঈদ ঘিরে মহাসড়ক কিংবা থানা এলাকায় বাড়তি নজরদারি রাখা হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কয়েকগুণ বাড়ানো হবে। এছাড়াও র্যাব ও স্বেচ্ছাসেবক থাকবে সড়কে। ফলে মানুষ নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে আশা তাদের।
দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ এ শিল্পনগরীতে স্থানীয়দের তুলনায় অস্থায়ী মানুষের বসবাস বেশি। প্রতিবছরই ঈদে এখানকার কর্মজীবী মানুষ নিজ জন্মস্থলে ছুটে যান। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে মানুষের মাঝে ভয়ের সৃষ্টি হয়েছে। তারা যাতায়াতের ক্ষেত্রে ছিনতাই-ডাকাতির পাশাপাশি রেখে যাওয়া ফাঁকা বসতবাড়িতে চুরি-ডাকাতি রোধে প্রশাসনকে তৎপর থাকার দাবি করেন।
ঈদ ঘিরে অসংখ্য মানুষ নগর ছেড়ে যাবেন, ফলে তাদের বাড়িঘর, ফ্ল্যাট ও অফিস ফাঁকা হয়ে যাবে। এই সুযোগে অপরাধীরা আরও বেশি সক্রিয় হবে বলে শঙ্কা মানুষের।
এদিকে শুধু সাধারণ মানুষই নয় পরিবহন চালক ও বাস কাউন্টার কর্তৃপক্ষের মাঝেও ভীতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। তারা মনে করছেন, মহাসড়কে প্রশাসনের বাড়তি নিরাপত্তা না থাকলে যাত্রী ও চালকদের ডাকাত-ছিনতাইকারীদের কবলে পড়তে হতে পারে।
চিটাগাংরোড মার্কেটের একটি শপে চাকরি করেন মো. আলাল উদ্দিন। প্রতিবছর নিজ গ্রামে ঈদ উদযাপন করলেও এবার তিনি সিদ্ধিরগঞ্জেই ঈদ পালন করবেন বলে জানান। তিনি বলেন, দেশের এই পরিস্থিতিতে খালি বাসা রেখে যাওয়া দুশ্চিন্তার। তাই এবার ঈদ এখানেই করবো। যে হারে চুরি ছিনতাই হচ্ছে খালি বাসায় অঘটন ঘটা অস্বাভাবিক নয়। তাই এবারের ঈদ এখানে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আদমজী ইপিজেডের গার্মেন্টস কর্মী ইয়াছিন আরাফাত সবুজ। নিজ জেলা নোয়াখালীতে প্রতিবছর ঈদ উদযাপন করলেও এবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান।
a
তিনি বলেন, আমাদের ফ্যাক্টরি ৪ জুনের পর ছুটি ঘোষণা করা হবে। লম্বা ছুটি পাবো কিন্তু তবুও এবার গ্রামে ঈদ করার সম্ভাবনা কম। দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছি। দেশের এই অবস্থায় বাসা ফাঁকা রেখে যাওয়া ভয়ের। না যাওয়ার সম্ভাবনা ৯০ ভাগ।
সোনারগাঁ জাদুঘর এলাকার বাসিন্দা ও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রহিম উদ্দিন এবারের ঈদুল আজহা ঢাকাতেই করতে ইচ্ছুক। তিনি বলেন, আমরা বিগত সময়ে গ্রামে ঈদ করলেও এবার বাড়িঘর রেখে যাওয়াটা নিরাপদ মনে করছি না। এখানে চুরি-ছিনতাই নিত্য ঘটনা হয়ে গেছে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি ফাঁকা বাসা রেখে গ্রামে যাবো না।
দূরপাল্লারর কয়েকজন বাসচালকের মতে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁয়ের মেঘনা থেকে কুমিল্লা অংশ পর্যন্ত ডাকাতদের আক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। সড়কে প্রশাসনের টহল বাড়ালে ঝুঁকি কমবে।
দূরপাল্লার বাস কাউন্টারের কর্মকর্তারা বলছেন, ৪-৫ জুন হতে যাত্রীর চাপ বাড়বে। বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন থাকলে চালক ও যাত্রীরা নির্বিঘ্নে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে।