লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেনের বহুতল বাসভবনে গত বছরের ৫ আগস্ট আগুন দেওয়া হয়। সেখানে দগ্ধ হয়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় লালমনিরহাটে আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে আগুনে পুড়ে ছয়জনের মৃত্তুর ঘটনায় ৭৩ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আসামিদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে লালমনিরহাট সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত ৬ জনের সহযোদ্ধা আরমান আরিফ। আরমান পৌরসভার নর্থ বেঙ্গল মোড়ের মো. নুর ইসলামের ছেলে। এরপর রাতেই অভিযান চালিয়ে ছয়জন এজাহারভুক্ত আসামিকে শহর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- লালমনিরহাট শহরের পূর্ব থানা পাড়ার বাসিন্দা ও পৌর আওয়ামী লীগের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদ হাসান ওরফে ভুট্টু (৪৮), রিফিউজি কলোনির বাসিন্দা পৌর আওয়ামী লীগের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি সেলিম খান ওরফে বকুল (৫৬), বসুন্ধরা এলাকার শরীফ মোহাম্মদ আতাউল্লাহ (৫০), সদরের কাজীর চওড়া গ্রামের বাবুল (৩৫), ওয়ারলেস কলোনির মো. দোয়েল (৩৬) ও রিফিউজি কলোনির মো. জুয়েল মিয়া (৩৯)। প্রথম দুজন ছাড়া অন্য চারজন আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায় যে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় আওয়ামী সরকারবিরোধী বিক্ষুব্ধ জনতার মিছিল আওয়ামী লীগ নেতা সুমন খানের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আসামিদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় এজাহার নামীয় আসামিরা অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ছয়জনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি ও অপহরণ করে। এরপর এজাহারভুক্ত আসামিরা ছয়জনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করেন। পরে বিকেল চারটার দিকে তাঁদের সুমন খানের বাড়ির ভেতরে আটকে রেখে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুন লাগিয়ে আসামিরা পালিয়ে যান বলে অভিযোগ করা হয়।
নিহত ছয়জন হলেন বসুন্ধরা এলাকার জোবায়ের হোসেন (১৭), সুরকিমিল এলাকার আল শাহরিয়ার রিয়াদ ওরফে তন্ময় (১৯), আদিতমারীর খাতাপাড়া গ্রামের শাহরিয়ার আল আফরোজ ওরফে শ্রাবণ (১৮), নবীনগরের জনি মিয়া (২০), কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ির রাধিক হোসেন ওরফে রুশো (১৯) এবং বানভাসা এলাকার রাজিব উল করিম সরকার (১৮)।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরনবী ও পরিদর্শক (তদন্ত) বাদল কুমার মণ্ডল বলেন, মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা সুমন খানসহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন।