এস এম জহিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ
নারায়ণগঞ্জ শহরের অসহনীয় যানজট পরিস্থিতি যখন জনজীবনে চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, ঠিক তখনই আশার আলো নিয়ে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্র দুই নং রেলগেট এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যদের যানজট নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। এই উদ্যোগে নগরবাসী সাময়িক স্বস্তি প্রকাশ করলেও তাদের মূল প্রত্যাশা একটি স্থায়ী ও কার্যকর সমাধান।
গত কয়েক মাস ধরে নারায়ণগঞ্জ শহরের যানজট পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, যে পথ রিকশায় অতিক্রম করতে পূর্বে মাত্র দশ মিনিট লাগতো, যানজটের কবলে পড়ে এখন সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে। শহরের প্রধান সড়কগুলোতে দিনভর লেগে থাকা এই যানজট সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম, শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যাতায়াত এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা এনে দিয়েছে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত সময়ক্ষেপণ কেবল ব্যক্তিগত পর্যায়েই নয়, শহরের সামগ্রিক উন্নয়নের গতিকেও ব্যাহত করছে।
যানজট নিরসনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দীর্ঘদিনের চেষ্টার পাশাপাশি সেনাবাহিনীর এই অংশগ্রহণ নগরবাসীর মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। সড়কে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সুশৃঙ্খল উপস্থিতি এবং কার্যকর পদক্ষেপ যানজট পরিস্থিতিকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসবে বলে অনেকেই মনে করছেন। তাদের মতে, সেনাবাহিনীর কঠোর তত্ত্বাবধান ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে।
নগরবাসী দীর্ঘদিন ধরে এই দুঃসহ যানজট থেকে মুক্তি পেতে চাইছেন। সেনাবাহিনীর এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়ে তারা বলেন, শুধু তাৎক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং শহরের দীর্ঘমেয়াদী যানজট সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করা জরুরি। স্থানীয়দের মতে, অবৈধ যান চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ, অপরিকল্পিত পার্কিং বন্ধ করা, ফুটপাত দখলমুক্ত রাখা এবং ট্রাফিক আইনের যথাযথ ও কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করা গেলে এই সমস্যা থেকে অনেকাংশেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
এই প্রেক্ষাপটে, প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সমন্বিত উদ্যোগে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ এবং তার সঠিক বাস্তবায়নের মাধ্যমেই নারায়ণগঞ্জ শহরকে যানজটমুক্ত করা সম্ভব বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিক সমাজ। সেনাবাহিনীর এই তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ স্বস্তিদায়ক হলেও, চূড়ান্ত সাফল্য নির্ভর করবে একটি টেকসই সমাধানের ওপর।