ময়মনসিংহে হলের সিট বরাদ্দের নবায়ন নিয়ে দুই দল সাধারণ শিক্ষার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়।
এ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অর্নিদ্দিষ্টকালের জন্য হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সে সঙ্গে আগামী তিনদিন কলেজের শ্রেণি কার্যক্রমও বন্ধ ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
রোববার (১২ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৮টায় সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে উদ্ভুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে এক জরুরি বৈঠকে এ সিন্ধান্ত নেয় কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আমান উল্লাহ।
এ সময় উপস্থিত সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আমান উল্লাহ এ ঘোষণা দেন।
এতে পরিস্থিত স্বাভাবিক হয়।
তবে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকার সময়ে পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক চলবে এবং মেয়েরা হলে স্বাভাবিক থাকবে বলেও জানান অধ্যক্ষ।
সংঘর্ষের বিষয়ে হল সুপার মো. শাহজাহান করিম বলেন, হলের সিট বরাদ্দের নবায়ন নিয়ে হলে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হলের বাইরে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সুনির্দিষ্টভাবে ছাত্রদল বা একক কোন ছাত্র সংগঠন জড়িত না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দুইটি পক্ষের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে রোববার (১২ জানুয়ারি) বিকেল ৫টা থেকে শুরু হওয়া এ সংর্ঘষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। পরে ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বতর্মানে ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম খান খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে আর কোনো বিশৃঙ্খলা না ঘটে সে বিষয়ে প্রশাসন সর্তক অবস্থানে রয়েছে।
আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আমান উল্লাহ বলেন, হলের সিট নবায়ন ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত। এতে কোনো একক ছাত্র সংগঠন জড়িত না।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ময়মনসিংহ জেলার সমন্বয়ক মো: আশিকুর রহমান বলেন, হলের শিক্ষার্থীরা আমাদের কলেজ অধ্যক্ষকে ক্ষমা চাইতে বলে অপমান করায় সাধারন শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়েছে। অবিলম্বে হলে থাকা ছাত্রলীগের দোসরা ও সহযোগীদের বের করতে হবে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ম অনুযায়ী হলের সিট বরাদ্দ দিতে হবে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রদলকে জড়িয়ে অপপ্রচার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন আনন্দ মোহন কলেজ, জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নেতারা।
এ বিষয়ে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দাউদ রায়হান এবং মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহম্মেদ রবিন বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে হলের সিট নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে কিন্তু একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছাত্রদলকে জড়িয়ে অপপ্রচার করছে। আমরা এ ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।