নারায়ণগঞ্জের বাজারে মৌসুমী ফলে ভরে উঠেছে


গ্রীষ্ম শেষে বর্ষার শুরুতে নারায়ণগঞ্জের ফলের বাজার মৌসুমী ফলে ভরে উঠেছে। লট্কন, লিচু, আনারস, জাম, জাম্বুরা, পেয়ারা, ডেওয়া, আম, কাঁঠালসহ নানান জাতের ও নানান স্বাদের দেশীয় ফলে আড়ৎ-দোকান ছেয়ে গেছে। বিদেশী ফল ভুলে গিয়ে মৌসুমী ফলে কিনতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে সাধারণ ক্রেতারা।

বুধবার (২৬ জুন) নগরীর ২নং রেল গেইট, দ্বিগুবাবুর বাজার, চারারগোপ ফলের বাজারে ঘুরে দেখা যায়, নরসিংদীর লটকন, গাজীপুরের কাঁঠাল, জাম, দিনাজপুরের লিচু, মৌলভীবাজারের জাম্বুরা দিয়ে স্টলগুলো সাজানো হয়েছে। সেই সাথে রয়েছে লেংড়া, হাড়িভাঙ্গা, লক্ষণা, ফজলি, রুপালীসহ বিভিন্ন জাতের আম।

ক্রেতারা দোকানে দোকানে ঘুরে পছন্দ করে ফল কিনছেন। লিচু প্রতি পিস ৮-১০ টাকায়, লটকন কেজিতে ১৮০-২০০ টাকায়, বিভিন্ন জাতের আম কেজিতে ১২০-১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, সপ্তাহের শুরু থেকেই বিভিন্ন মৌসুমী ফল তোলা হয়েছে। আমের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ অনেকটাই বেশি।

ফল বিক্রেতা ইব্রাহীম বলেন, হাড়িভাঙ্গা কেজিতে ১৩০, লেংড়া আম কেজিতে ১২০-১৩০ টাকা করে বিক্রি করছি। সবগুলো আমই রাজশাহী থেকে এনেছি। বিদেশী ফলের তুলনায় দেশীয় ফলে ক্রেতারা ঝুকেছেন।

আম কিনতে আসা সৈকত বলেন, এখন তো আমের সিজন চলছে। বাসায় বাচ্চারা আম খেতে চেয়েছে। তাই কাজ শেষে আম নিয়ে যাচ্ছি। সাথে লটকনও নিয়েছি। আরেক ক্রেতা আমেনা বেগম বলেন, বাসার জন্য হাড়িভাঙ্গা আম, লিচু আর ছোট চাওলা কাঁঠাল নিছি। আম, লিচু আজকে সবাই মিলে খাবো। কাঁঠালটা কাল ভাঙবো।

দ্বিগুবাবুর বাজার ও চারারগোপ বিভিন্ন ফলের আড়তে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেটে করে বিভিন্ন জাতের আম রাখা হয়েছে স্টোরেজে। ক্রেতারা দরদাম করে চাহিদামত আম কিনছেন।

আড়ৎদার আব্দুর রব বলেন, আজকে আলহামদুলিল্লাহ সেল ভালো হয়েছে। রুপালী, হাড়িভাঙ্গা, মল্লিকা, লক্ষণা, ফজলি আমের অনেকগুলো ক্রেট বিক্রি হয়েছে। সবগুলোই আমরা রাজশাহী থেকে এনেছি। কমপক্ষে ১টা করে ক্রেট বিক্রি করছি যাতে ২২-২৩ কেজি আম ধরে।

বাবুর আড়তে দিলীপ কুমার মোদক বলেন, গতবারের তুলনায় এবার আমের সাপ্লাই কম হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ায় অনেক ফল নষ্ট হয়েছে। ক্রেতাদের চাহিদা আছে বেশ। তারা আসছেন জাতভেদে চাহিদা বুঝে আম নিচ্ছেন। আমরা বিভিন্ন জাত কেজিতে ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি করছি।

সব ধরণের মৌসুমী ফলের চাহিদা বেশি থাকলেও কাঁঠালে মানুষদের আগ্রহ অনেকটাই কম বলছেন বিক্রেতারা। কাঁঠাল বিক্রেতা সুমন লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, রমজানের পর থেকেই কাঁঠাল বিক্রি করছি। এখন কাঁঠালের ভালো মৌসুম। তবে কাঁঠালে ক্রেতাদের তেমন আগ্রহ দেখছি না।

আকারভেদে ৮০ টাকা, ১০০ টাকা করে চাওলা আর গালা কাঁঠাল বিক্রি করছি। কখনও কখনও ক্রেতারা আসেন, দাম মুলামুলি করেন আর চলে যান।

চারারগোপ ও দ্বিগুবাবুর বাজারে আড়ৎদাররাও কাঁঠাল নিয়ে একই কথা বলছেন।

আড়ৎদার মোস্তফা বলেন, কাঁঠাল উঠাইছি গতকাল। এখন পর্যন্ত কোনটাই বিক্রি হয় নাই। পাইকারী কাস্টমার পাই না এর। লস কমাইতে খুচরা করে বিক্রি শুরু করেছি। ৮০ টাকার ‍গুলা একপাশে, ১০০ টাকার গুলা একপাশে রাখছি।

চারারগোপে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাজীপুর থেকে ট্রলারে করে কাঁঠাল আনা হয়েছে। ক্রেতাদের কাছে বিক্রি সম্পন্ন হলে আবার বাড়ির দিকে ফিরবেন বিক্রেতারা। গাজীপুরের তেমনই এক বিক্রেতা রিয়াজউদ্দীন ব্যাপারী লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, গাজীপুর থেকে এই সপ্তাহে ২ বার আসছি। কাঁঠাল যে বিক্রি করতেছি তা দিয়া ট্রলার ভাড়াই উঠাতে কষ্ট হচ্ছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *