সরকার দেশবিরোধী চুক্তির মাধ্যমে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করছে : মাওলানা লোকমান


ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক বলেছেন, বর্তমান ডামি সরকার ও সরকারের সকল মন্ত্রী-এমপিরাই দেশের জন্য ক্ষতিকারক। কাজেই এই অবৈধ সরকারকেই ক্ষমতাচ্যুত করে দেশপ্রেমিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শেখ হাসিনার সরকার ভারতের স্বার্থে সব কিছু করছে। প্রধানমন্ত্রী ভারতকে সবকিছু উজার করে দিতে পেরেই আত্মতৃপ্ত ও খুশি। কিন্তু দেশের জন্য কিছু নিয়ে আসতে না পারা যে তার জন্য ব্যর্থতা তা বুঝতে পারছেন না। এই অথর্ব প্রধানমন্ত্রী দেশের জন্য অভিশাপ। এদেরকে এখনই বিদায় করে দেশপ্রেমিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বাংলাদেশের উপর দিয়ে ভারতের রেল করিডোরের স্বপ্ন পূরণ করতে দেওয়া হবে না। যেকোনো মূল্যে এই সিদ্ধান্ত রুখে দেওয়া হবে। তাই চূড়ান্ত আন্দোলনের আগেই সরকারকে রেল করিডোরসহ ১০টি অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে। না হয় সারাদেশে দল-মত নির্বিশেষে এ ব্যাপারে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফরে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে বিভিন্ন চুক্তি করা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রেল করিডোর। এটি দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। দেশের জনগণের স্বার্থ উপেক্ষা করে চুক্তি করা হয়েছে। তাই এসব চুক্তি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকাল ৪টায় ডিআইটি চত্বরে কেন্দ্র ঘোষিত দেশব্যাপী বিক্ষোভের অংশ হিসেবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের যৌথ উদ্যোগে ভারতের সাথে দেশবিরোধী সকল চুক্তি বাতিল এবং দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ।

জেলা সভাপতি মাওলানা দ্বীন ইসলাম সাহেবের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর সহ-সভাপতি যথাক্রমে হাফেজ মুহাম্মদ আমিন উদ্দিন ও মুহা. নুর হোসেন, জেলা ও নগর সেক্রেটারি যথাক্রমে জাহাঙ্গীর কবির ও সুলতান মাহমুদ, জয়েন্ট সেক্রেটারি যথাক্রমে হাজী আমান উল্লাহ ও ডা. সাইফুল ইসলাম, জেলা ও নগর সাংগঠনিক সম্পাদক যথাক্রমে ফারুক আহমেদ মুন্সী ও মাও. শামসুল আলম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর সভাপতি যথাক্রমে মুহা. ওমর ফারুক ও মাওলানা হাবিবুল্লাহ হাবিব, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে মাও. আব্দুর রশিদ ও মাও. মুহা. আনোয়ার হোসেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি যথাক্রমে মুহা. আশ্ররাফ ও ওমর ফারুক, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর সভাপতি মাওলানা রেজাউল করিম ও গাজী আলতাফ হোসেন, ওলামা মাশায়েক আইম্মা পরিষদের জেলা সাধারণ সম্পাদক মুফতি আল আমিন ও নগর সভাপতি মাওলানা শাহজালাল। শহর শাখার সভাপতি আ. সোবহান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সভাপতি মুহা. বিল্লাল হোসেন ও বন্দর থানার সভাপতি আবুল হাসেম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

বিশেষ বক্তার বক্তব্যে মাও. সাইফুল ইসলাম বলেন, ভারতের রেল বাংলাদেশের ভূ-খন্ডে চলতে দেয়া হবে না। একবার যদি পরীক্ষামূলকভাবে ভারতের রেল চলতে দেয়া হয় তা’ হলে এ রেল আর বন্ধ হবে না। ফলে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌত্ব থাকবে না। ভারতের সাথে আমরা সুসম্পর্ক চাই কিন্ত তা’হতে হবে মর্যাদাপূণ সম্পর্ক। ভারতের স্বার্থে দেশবিরোধী কোনো চুক্তি এদেশের মানুষ মেনে নিবে না। স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশের ওপর দিয়ে ভারতের রেল চলার করিডোর দেয়া যায় না। ভারতকে সন্তুষ্ট রাখতে হলে ক্ষমতা ছেড়ে দিন। প্রধানমন্ত্রীকে এদেশের জনগণ ক্ষমতায় বসায়নি। ক্ষমতায় বসিয়েছে ভারত। যারা ভারতের সাথে বার্গেনিং করে দেশ চালাতে পারবে না। তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই।

প্রধান বক্তা মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের সাথে ১৩টি চুক্তি কথা বলা হেয়ছে। তিনি বলেন, বতমমান সরকারকে রক্ষায় কাজ করছে পুলিশ বাহিনী ও সেনাবাহিনী। এজন্য এই দুই বাহিনীকে ভারত ট্রেনিং দিয়ে মগজ ধোলাই করার চুক্তি করা হয়েছে। ভারত আমাদেরকে কী ট্রেনিং দিবে? বর্তমান সরকার জনগণ বর্জিত সরকার। দেশের প্রতি তাদের ন্যুনতম দায়বদ্ধতা থাকলে ভারতের সাথে অসম চুক্তি করতে পারে না। তিনি বলেন, ১০ টি দেশবিক্রির চুক্তি। প্রধানমন্ত্রী ইউরোপের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, ইউরোপে বর্ডার নেই, কিন্তু ইউরোপে তো বিনা ভোটে সরকারও নির্বাচিত হয় না, দুর্নিতি হয় না, দুর্নীতিবাজদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বিদেশে পাঠানো হয় না, দিনের ভোট রাতে হয় না। তাহলে আপনি এগলো করছেন কেন? ধান্দাবাজি ছেড়ে দিয়ে দেশ রক্ষায় কাজ করুন, না হলে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে জনগণকে অভিশাপ থেকে বাচান। তিনি বলেন, সরকার শিক্ষাখাত, অর্থনৈতিক খাত, ব্যাংকগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা দ্বীন ইসলাম বলেন, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ট্রেনের পরীক্ষামূলক যাতায়াত শুরু হবে। কিন্তু বাস্তবে এটি পরীক্ষামূলক থাকবে না। তাই দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে আন্দোলনের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। যদি ভারত এই রেল করিডোর ব্যবহার করা শুরু করে তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব থাকবে না। এখন যেমন বাংলাদেশের মানুষ সরকার গঠন করার ক্ষমতা হারিয়েছে, তখন বাংলাদেশের মানুষ সার্বভৌমত্ব হারাবে। এ জন্য বাংলাদেশের উপর দিয়ে ভারতের রেল চলতে দেওয়া হবে না।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *