কর্মসূচিতে না থাকলে সেই নেতাকে খোকন-আনোয়ার স্বীকৃতি দেয় না


বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও প্লাটিনাম জয়ন্তী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে ২৬ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ। শনিবার (৬ জুলাই) বিকেলে বন্দর ২৬ নং ওয়ার্ড সোনাচড়া বাগ এলাকায় এই সভার আয়োজন করা হয়।

এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড খোকন সাহা।

প্রধান অতিথির বক্তব্য আনোয়ার হোসেন বলেন, একটা কমিটিতে ১০ জনকে সাধারণ সম্পাদক বা সভাপতি করা যায় না। যারা চলমান রাজনীতিতে মহানগর আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন তাদেরকেই নির্বাচিত করা হয়েছে। যত বড় নেতা হোন না কেন মহানগর আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে থাকবেন না কিন্তু নেতা হয়ে যাবেন এটা হতে পারে না। যারা মহানগর আওয়ামী লীগকে বিগত ১৩ বছর ধরে বিভিন্ন কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন তারাই আজ নেতা হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের একটাই যোগ্যতা সেটা হল তারা চলমান রাজনীতিতে আমাদের অংশীদার। আর আমাদের হাতের শক্তি ঝুগিয়েছে এই ১৩ বছর। তার ফলস্বরূপ পুরস্কার হিসেবে আমরা তাদেরকে সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি করেছি। আপনি যত বড় শিক্ষিত হন না কেন, ঘরে বসে থাকবেন আর কাউন্সিলরদের মিছিল নিয়ে আসবেন, আনোয়ার হোসেনের খোকন সাহা এই নেতাদের স্বীকৃতি দেয় না। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনেক চড়াই উতরাই পার করে এই সংগঠনকে নিবেদন করেছেন। আর যদি আমরা সেই সংগঠনকে একত্র করে ধরে রাখতে না পারি তাহলে এর থেকে লজ্জা আর কিছু হবে না। শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা মহানগরের দায়িত্ব এসে বন্দরের ২৭ টি ওয়ার্ডের ১৭ টি কমিটির কাজ সম্পন্ন করেছি। নির্দেশ অনুযায়ী আমরা বিভিন্ন কর্মসূচের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করেছি।

এসময় তিনি আরও বলেন, আজ ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করছি। সেই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজকের এই আয়োজন। আওয়ামীলীগ এমন একটি সংগঠন যেটা মাটি থেকে শুরু হয়েছিল আর আজ এখানে এসে পৌঁচেছে। আওয়ামীলীগের মাধ্যমেই বাংলাদেশের আন্দোলন সংগ্রাম শুরু হয়েছিল। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বাংলার মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্তন করেছে। আমাদের দেশ আমরাই চালাবো এটাই ছিল বাঙালিদের দাবি, আর দাবির নেতৃত্ব দিয়েছে বঙ্গবন্ধু। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অনেক ছড়ায়-উত্তরাই পর করে আওয়ামীলীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। আজও অনেক ষড়যন্ত্র এবং অত্যাচার করে বারংবার দেশনেত্রী শেষ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু পারে নি। কারণ শেখ হাসিনার উপর আমাদের আল্লাহর রহমত আছে। আজ শেখ হাসিনা আছেন বলেই আওয়ামী লীগ আছে। আজ পদ্মার পাড়ের মানুষ ঢাকায় এসে অফিস করে আবার ফিরে যেতে পারে এটাও শেখ হাসিনার ও আওয়ামীলীগের অবদান। বিএনপির আমলে রমজান মাসে বিদ্যুতের জন্য এলাকায় এলাকায় মিছিল হতো। আজ কিন্তু সেই মিছিল হয় না। কারণ প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এখন বিদ্যুত চলে গেছে। এই দেশকে উন্নতির করতে হলে একটা সংগঠন হতে হবে। সেটা হলো আওয়ামীলীগের সংগঠন।

মহানগর আওয়ামীলীগের এই সভাপরি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ থাকলেই শেখ হাসিনা থাকবে, আর শেখ হাসিনা থাকলেই বাংলাদেশ থাকবে। আর সংগঠন থাকলে আনার হোসেন খোকন সাহা থাকবে। আর যদি আমরা আওয়ামী লীগের সাথে চলে যাই তাহলে আমাদের আর কোন দাম থাকবে না। আমাদের দলের কাছে কিছু করে থাকি তাহলে তৃণমূলের নেতা কর্মীরা তারা তাদের অনুষ্ঠানে আমাদের কিছু হলেও স্মরণ করবে। বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বসির ভাইয়ের বাড়ি এই ২৬ নং ওয়ার্ডের। তার ভাইকে এই ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি করা হয়েছে। আমি তাকে অনুরোধ করব সবাই মিলেমিশে এই দল থেকেই নিয়ে যান। আপনাদের মধ্যে যদি কোন ধরনের ঝগড়া থাকে বা কোন কোন দল থাকে বা কোন অভিযোগ থাকে তাহলে আসে খোকন সাহেব এবং আমার সাথে বসি আলোচনা করি। আপনাদের ভুল ত্রুটি সংশোধন করে দলকে আবার চালিত করার চেষ্টা করুন। তৃণমূল আওয়ামীলীগের শক্তি। তৃণমূল বেঁচে থাকলে আমরা বেঁচে থাকবো তৃণমূলকে শক্তিশালী করার জন্যই আজ আমরা এই অঞ্চল থেকে সেই অঞ্চল ঘুরে বেড়াচ্ছি। অনেক বছর এই অঞ্চলে আওয়ামী লীগের আমলীগের কমিটি ছিল না। অনেকদিন পর এই অঞ্চলে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি করেছি বিধায় আজ আমরা সভা সমাবেশ করতে পারছি। আমি ২৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগকে ধন্যবাদ জানাই এই আয়োজনের জন্য। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সবাইকে একত্র থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা সবাই তার নির্দেশ পালন করব।

অনুষ্ঠানে ২৬ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও ২৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনির আহমেদের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নুর ইসলাম চৌধুরী , যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জি এম আরমান, এস এম আহসান হাবিব, সাংগঠনিক সম্পাদক এড মাহমুদা মালা, দপ্তর সম্পাদক বিদ্যুত সাহা, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির মৃধা, মহানগর তাতী লীগের আহবায়ক চৌধুরী এইচ এম শাহেদ,বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা খান মাসুদ ও সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন আনু সহ আরো অনেকে।

সভায় এড মাহমুদা মালা বলেন, আইন পেশায় সাহায্য চেয়ে এমন কোনো নেতা নেই যিনি খোকন সাহা সাহায্য পায় নি। তিনি জণমানবের নেতা। আওয়ামীলীগের জন্ম রোজ গার্ডেনে হলেও নারায়ণগঞ্জের এর অবদান আছে। উপমহাদেশে আওয়ামীলীগ অন্যতম পুরোনো দল আওয়ামী লীগ। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চাইতে এই দলের অর্জন অনেক বেশি। বাঙালি জাতির স্বাধীকার, ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ এ সব কিছুর সাথেই আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা আছে। এই আওয়ামী লীগের জন্ম রোজ গার্ডেনে। কিন্তু এই রাজনৈতিক দলে নারায়ণগঞ্জের বিশাল অবদান আছে।

সমাপনি বক্তব্য ২৬নং ওয়াড আওয়ামীলীগের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন বলেন, আপনারা যে কর্মসূচি দেওয়ার হাক দিবেন আমর এবং আমাদের কর্মীরা আমাদের দ্বায়িত্ব পালন করবো। অন্যান্য ওয়ার্ড কমটিতে বিভিন্ন ঝামেলা থাকে কিন্তু আমাদের কমিটিতে কোন ঝামেলা বা কোন্দল সৃষ্টি হয় নি। আমরা মহানগর আওয়ামীলীগের সাথে আছি।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *