আলোরধারা ডেস্ক:
ছেলে জুনাইদকে নিয়ে বাজার করতে বেরিয়েছিলেন মো. হাসান (৩০)। ছেলেকে কোলে নিয়েই মহাসড়ক পার হচ্ছিলেন। এমন সময় দ্রুতগামী একটি বাস আসতে দেখে কোলে থাকা সন্তানকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে নিজে বাসচাপা পড়েন।
বুধবার (১৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে আটটার দিকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মেঘনা টোলপ্লাজা এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামগামী লেনে এই ঘটনা ঘটে। কাঁচপুর হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বলেন, সেঁজুতি পরিবহনের
একটি দূরপাল্লার বাসের (ঢাকা মেট্রো-ব: ১৫-৭৪৪৫) চাপায় ঘটনাস্থলেই মারা যান মো. হাসান নামে ওই ব্যক্তি। তার সন্তান কিছুটা আঘাত পেলেও এখন সুস্থ আছে।
ঘটনাস্থলে যাওয়া এই পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে বলেন, নিহত ব্যক্তির কোলে ছিল তার শিশু সন্তান। দ্রুতগামী বাসটি দেখে তিনি কোলে থাকা সন্তানকে ছুড়ে ফেলে দেন। পরে বাসের নিচে চাপা পড়েন ওই ব্যক্তি। ঘটনার পরপরই বাসচালক ও তার সহযোগী পালিয়ে যায়। তবে বাসটি ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা হয়েছে।
নিহত হাসানের বাড়ি বরগুনা জেলার আমতলীর সোনাখালী গ্রামে। সে ওই গ্রামের ইউসুফ হাওলাদারের ছেলে। পেশায় টাইগার সিমেন্ট কারখানার গাড়িচালক হাসান স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানকে নিয়ে সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকায় ভাড়াবাসায় থাকতেন। নিহতের ভায়রা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সাদেকুর রহমান বলেন, সকালে বাজার করার জন্য ছেলে জুনাইদকে নিয়ে বের হয় হাসান। কোলেই ছিল জুনাইদ। বেপরোয়াভাবে বাসটিকে আসতে দেখে তৎক্ষনাৎ কোলে থাকা ছেলেকে ছুড়ে ফেলে দেয় হাসান।
কিন্তু নিজে বাসের নিচে চাপা পড়ে। তার ছেলেও অজ্ঞান অবস্থায় রাস্তায় পড়েছিল। এক ইজিবাইক চালক তারে চিনতে পাইরা বাসায় খবর দেয়। তিন ঘন্টা পর বাচ্চার জ্ঞান ফিরছে। তিনি বলেন, খবর পাওয়ার পর থেকে হাসানের স্ত্রী মাসুমা কান্নাকাটি করতেছেন। ইনকামের একমাত্র ব্যক্তি ছোট পোলাটা রাইখা মারা গেল। এইটারে পরিবারের কেউ মাইনা নিতে পারতেছে না।
লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান কাঁচপুর হাইওয়ে থানার পরিদর্শক (ট্রাফিক) সৈয়দ নাজমুল হুদা। তিনি বলেন, সড়ক আইনে এই বিষয়ে মামলা হবে। বাসটিকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হবে। পলাতক চালক ও তার সহযোগীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।