আলোরধারা ডেস্ক:
সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানী ঢাকায় বেড়েছে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার চুরির ঘটনা। আর এইসব চুরির ঘটনা বেশিরভাগেই ঘটছে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে।আপনি হয়তো মোটরসাইকেল বা প্রাইভেটকার রাস্তায় পার্ক করে বাজার কিংবা নামাজে গেছেন, এসে দেখছেন আপনার প্রিয় যানবাহনিটি নেই।ইতোমধ্যেই এসব চুরির ঘটনা রোধে বেশ তৎপর হয়েছে পুলিশ।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নকল চাবি দিয়ে তালা খুলে মোটরসাইকেল চুরির সঙ্গে জড়িত একটি চক্রের ৫ সদস্যকে গেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান নকল চাবি দিয়ে ৫০০টিরও বেশি মোটরসাইকেল চুরি করেছে চক্রটি।
এবার মাত্র ৩-৪ মিনিটের মধ্যেই প্রাইভেটকার চুরি করে নেওয়ার একটি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।তাদেরকে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে উত্তরা পূর্ব থানা-পুলিশ। উত্তরা পূর্ব থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইমরোল হোসেন অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন– জিতু মিয়া ও শহীদ মিয়া। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে গাড়ি চুরিতে ব্যবহৃত তিনটি প্লাইয়ার্স, চারটি স্ক্রু ড্রাইভার, একটি সেলাই র্যান্স, একটি টেস্টার, একটি গ্যাস সুইচ উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও ১১টি বিভিন্ন অপারেটরের সিম, পাঁচটি মোবাইল ফোন, দুইটি ব্যাগ ও দুইটি গাড়ির নাম্বারপ্লেট উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, এ চক্রের সদস্যরা তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে কাজ করে। রাস্তায় পার্ক করে রাখা কোনো গাড়ি যখন তারা টার্গেট করে তখন গাড়ির চালক বা মালিক আশপাশের কোথাও গিয়েছে কিনা সে বিষয়টি লক্ষ করে চক্রের একজন সদস্য। গাড়িটির দিকে কেউ খেয়াল রাখছে কিনা সেটি দেখে আরেকজন। অপর সদস্য গাড়ির কাছাকাছি অবস্থান নেয়। দ্রুত লক খুলে বাকি সদস্যদের গাড়িতে নিয়ে পালিয়ে যায়। চুরির পর বিভিন্ন জায়গায় গাড়িগুলো বিক্রি করে দেয় তারা।
এছাড়া, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে বেশকিছু ডিজিটাল নাম্বারপ্লেট পাওয়া গেছে। সেগুলোর বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) থেকে তথ্য চাওয়া হয়। এরই মধ্যে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত ১২ আগস্ট রাজধানীর উত্তরা হোপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সামনে পার্ক করা একটি প্রাইভেটকার চুরির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে চক্রটির সন্ধান পায় তারা। এরপর ওই এ ঘটনায় জড়িত জিতু ও শহীদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ আরও জানতে পারে, ১২ আগস্ট চুরি হওয়া গাড়িটি নিয়ে পালাচ্ছিল চক্রের সদস্যরা। মৌলভীবাজার বাহুবল এলাকায় পোঁছালে এক নারীকে চাপা দেয় কারটি। ওই নারী নিহত হন। গাড়িটি বর্তমানে বাহুবল থানায় রয়েছে।
গত ২৪ এপ্রিল রাজধানীর বিজয় সরণি এলাকা থেকে একটি গাড়ি চুরি হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়। মামলার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানা ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও জানা গেছে।
নিজের ব্যবহৃত প্রাইভেটকারে জিপিআরএস সিস্টেম ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে ডিএমপি উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোর্শেদ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “সতর্ক থাকতে হবে। শুধু উত্তরা বিভাগেই নয়, ওই চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গা থেকে গাড়ি চুরি করে। চক্রের অন্য সদস্যদের ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে।”
উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম বলেন, “গ্রেপ্তার জিতুর বিরুদ্ধে সাতটি এবং শহীদের বিরুদ্ধে একটি চুরির মামলা রয়েছে। একাধিকবার কারাগারে গেলেও জামিনে বের হয়ে একই ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে তারা। রাস্তায় পার্ক করে রাখা খালি গালিগুলোর প্রতি তাদের নজর থাকে।”
যেখানে-সেখানে গাড়ি পার্ক করে খালি গাড়ি রেখে না যাওয়ারও পরামর্শ দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।