Thursday , 9 May 2024 | [bangla_date]
  1. ! Без рубрики
  2. 1Win AZ Casino
  3. 1Win Brasil
  4. 1win Brazil
  5. 1WIN Casino Brasil
  6. 1win India
  7. 1WIN Official In Russia
  8. 1win Turkiye
  9. 1win uzbekistan
  10. 1winRussia
  11. 1xbet
  12. 1xbet apk
  13. 1xbet AZ Casino
  14. 1xbet Azerbajan
  15. 1xbet Casino AZ

সোনারগাঁয়ের রসালো লিচু বাজারে আসতে শুরু করেছে

প্রতিবেদক
admin
May 9, 2024 8:02 pm

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রসালো লিচু বাজারে আসতে শুরু করেছে। ভৌগলিক অবস্থান, আবহাওয়াগত বৈশিষ্ট্য ও নির্দিষ্ট জাতের কারণে সোনারগাঁয়ের লিচু সবচেয়ে আগে বাজারে আসে বলে এর আলাদা খ্যাতি রয়েছে।

সোনারগাঁয়ের লিচু আগাম বাজারে আসে বলে দেশের বিভিন্ন স্থানের লিচুর তুলনায় এ লিচুর চাহিদা থাকে বেশি। মিষ্টি ও সুস্বাদু হিসেবে সোনারগাঁয়ের লিচু সারা দেশে বেশ পরিচিত।

বৈশাখের শেষ সময়ে এ লিচু প্রথম বাজারে আসে।প্রতিবছরের ন্যায় এবারও চড়ামূল্যে বাগানীদের কাছ থেকে লিচু কিনেছে মৌসুমী লিচু ব্যবসায়ীরা। সোনারগাঁয়ের লিচুর কদর থাকায় বেশি লাভের আশায় আধপাকা লিচু বিক্রির জন্য বাজারে আনছেন ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, সোনারগাঁয়ে পর্তুগিজদের আগমনের পর অর্থাৎ ১৭০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রথম লিচুর চাষ শুরু হয়। পর্তুগিজরাই সোনারগাঁয়ে প্রথম লিচু চাষ শুরু করেন। প্রথমে ছোট পরিসরে এর চাষ শুরু হলেও এখন তা ব্যাপকভাবে রূপ নিয়েছে। লিচু ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় প্রতিনিয়ত জমির মালিকরা নতুন নতুন লিচুর গাছ রোপণ করছেন।

সোনারগাঁয়ে সাধারণত তিন প্রজাতির লিচুর ফলন হয়ে থাকে। এগুলো হলো- পাতি লিচু, কদমী লিচু ও বোম্বাই (চায়না-৩) লিচু। সোনারগাঁয়ে সর্বপ্রথম পাতি জাতের লিচু, পরে কদমী লিচু ও সর্বশেষ বোম্বাই জাতের লিচু পেকে থাকে। আকারে বড় ও সুস্বাদু হওয়ায় অনেকে এ লিচুকে ‘দিলীকা লাড্ডু’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

সোনারগাঁয়ের লিচুর বাগানে ঘুরে দেখা যায়,প্রতিটি বাগানের গাছে থোকায় থোকায় কাঁচা-পাকা লিচু ঝুলছে। গাছের ডালে ডালে ঝুলন্ত লাল টকটকে রঙের ছোট ফলের গুচ্ছ লিচুর দৃশ্য খুবই মনোরম। ব্যবসায়ীরা প্রতিটি গাছে বৈদ্যুতিক বাতি, টিনের বাজনা বাজিয়ে উচ্চশব্দ করে বাদুর ও কাকের উপদ্রব থেকে লিচুকে রক্ষা করতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন লিচু চাষিরা।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কদমি লিচুর পাশাপাশি ‘পাতি’ লিচু ও ‘চায়না-৩’ জাতের লিচু বেশি চাষ হয় সোনারগাঁয়ে। এই উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ৮৫টি গ্রাম লিচুর জন্য প্রসিদ্ধ।

তবে সোনারগাঁ পৌরসভার গোয়ালদী, হরিষপুর, দুলালপুর, পানাম গাবতলী, খাসনগর দীঘিরপাড়, চিলারবাগ, ইছাপাড়া, দত্তপাড়া, হাতকোপা, অজুন্দী, বাগমুছা, গোবিন্দপুর, লাহাপাড়া, বালুয়াদীঘিরপাড় ও বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হাড়িয়া, হামছাদী, দামোদরদী, পঞ্চবটী, মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া ও গোহাট্টা এলাকায় সবচেয়ে বেশি লিচুবাগান আছে। এসব এলাকার প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় ও আশপাশের ভিটাবাড়িতে লিচুর চাষ করা হয়।

স্থানীয় চাষিরা জানান, সোনারগাঁয়ে বর্তমানে কদমি, মোজাফফরপুরী, বোম্বাই (চায়না-৩), এলাচি ও পাতি এ পাঁচ ধরনের লিচুর চাষ হয়ে থাকে। তবে অন্যান্য লিচু থেকে বর্তমানে কদমি লিচু চাষের প্রতি মনোযোগী হয়ে পড়েছেন চাষিরা। প্রতি বছর একেকটি বাগান ৪ থেকে ৫ লাখ টাকায় বিক্রি হয়।

তাই চাষিরা কোথাও একটু খালি জায়গা পেলে সেখানেই কদমি লিচুর বাগান তৈরি করছেন। সোনারগাঁয়ে ছোট-বড় মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক লিচুর বাগান রয়েছে। এ বাগানে বেশির ভাগই কদমি লিচু চাষ হচ্ছে। শুরুতে ১০০ কদমি লিচু ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা দরে বিক্রি করে থাকেন।

বোম্বাই লিচুর ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, পাতি লিচু ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করে থাকেন। তবে এ বছর দাম একটু বেশি হবে।

লিচু বিক্রেতা আহম্মেদ আলী বলেন, অন্য অঞ্চলের লিচুর চাইতে সোনারগাঁয়ের লিচু আকারে একটু বড় ও সুস্বাদু হওয়ায় এ লিচুর চাহিদা বেশি রয়েছে। আর সোনারগাঁয়ের লিচু সবার আগে বাজারে আসে তাই এর চাহিদা একটু বেশি।

কুমিল্লা থেকে সাগর, তুহিন দুই বন্ধু এসেছিলেন লিচু কেনার জন্য সোনারগাঁও পৌরসভার ষোলপাড়া এলাকায়। তারা বলেন, সোনারগাঁয়ের লিচুর একটা ঐতিহ্য আছে। বছরের শুরুতে সোনারগাঁয়ের লিচু বাজারে আসার কারনে এর স্বাধ নিতে আমাদের খুর আগ্রহ থাকে। আর এই আগ্রহের কারনেই এতো দুর থেকে লিচু কিনে নিতে এসেছি।

রাইজদিয়া গ্রামের লিচু বাগানের মালিক লিয়ন জানান, সোনারগাঁয়ে এবার লিচুর ফলন খুবই কম হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় লিচু অনেকটা ঝরে পড়েছে। তাছাড়া আকারে অনেকটা ছোট হয়েছে।

স্থানীয় লিচু ব্যবসায়ী শাহা আলী বলেন, এ বছর লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। যদিও খরায় অনেক লিচু ঝরে পড়েছে, তারপরও লাভ হবে বলে আশা করছি।

গোয়ালদী গ্রামের লিচু বাগান মালিক আরমান বলেন, এ বছর টানা তাপপ্রবাহে অনেক লিচুর গুটি ঝড়ে পরেছে এবং লিচু পরিপুষ্ট হয়নি।লিচু ফলনের সময়ে ঝড়ের কারণে ক্ষতি না হলেও এবার খরার কারণে গাছেই নষ্ট হয়ে গেছে অনেক লিচু। লিচু পুষ্ট না হওয়ায় এ বছর আশানুরূপ দাম পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আছি।

সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরোজা সুলতানা বলেন, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে অন্তত ১ মাস আগে সোনারগাঁয়ের লিচু বাজারে আসে। ।

উপজেলায় এ বছর ১১০হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৫ হেক্টর বেশি। এরই মধ্যে সোনারগাঁয়ের লিচু বাজারে চলে এসেছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সর্বদা লিচু চাষীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।তাছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নের মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ লিচু চাষীদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, গত বছর সোনারগাঁয়ে ৭০০ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদিত হয়েছে। এ বছর ৭০০ থেকে ৭৫০ মেট্রিক টন উৎপাদিত হতে পারে। টানা তাপপ্রবাহে বেশ কিছু সংখ্যক লিচুর গুটি ঝড়ে পড়েছে, বড় অবস্থায় ও লিচু ঝড়ে পড়েছে। যার ফলে ফলনে কিছুটা ঘাটতি হতে পারে বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

সর্বশেষ - রাজনীতি