Sunday , 8 October 2023 | [bangla_date]
  1. ১৪০ এসপির পদোন্নতি
  2. ৩৯৭ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার
  3. অগ্নিকান্ড
  4. অপহরণ
  5. অর্থনীতি
  6. আইন-আদালত
  7. আইনজীবী
  8. আন্তঃজেলা পাঁচ ডাকাত গ্রেফতার
  9. আন্তর্জাতিক
  10. আর্কাইভ
  11. আলুর সিন্ডিকেট
  12. উপজেলা
  13. কাঁচপুর
  14. কৃষি ও প্রকৃতি
  15. খেলাধুলা

দুদকের মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা সিদ্ধিরগঞ্জে যুবলীগ নেতা মতি পলাতক

প্রতিবেদক
Md Hasan
October 8, 2023 10:33 pm

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহবায়ক  মতিউর রহমান মতি গা ঢাকা দিয়েছেন। অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করায় তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। গ্রেফতারী পরোয়ানার সত্যতা নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, ওয়ারেন্ট তামিল করার চেষ্টা চলছে।

জানা গেছে, কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি ও তার স্ত্রী রোকেয়া রহমানের বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধ উপায়ে ১৯ কোটি ৫০ লাখ ৫৩ হাজার ২০২ টাকা উপার্জনের অভিযোগে গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন দুদক।

মামলার বাদী দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ধারায় মামলা দুটি করা হয়।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ সম্পদ অর্জন অনুসন্ধানের পর কাউন্সিলর মতিকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ করা হয়। পরে ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর তিনি দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। বিবরণীতে তিনি ৯ কোটি ৬২ লাখ ৪২ হাজার ২৭ টাকা অর্জনের ঘোষনা দেন। কিন্তু  দুদকের তদন্তে দেখা যায় ১১ কোটি ৩৫ লাখ ৬৭ হাজার ২৮৩ টাকা জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেন। তাছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ৭৪ কোটি ৯৬ লাখ ৪০ হাজার ১০৩ টাকা জমা ও ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮৮ টাকা উত্তোলন করেন। এসব কর্মকান্ডের কারণে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদস্ত শেষ করে কমিশনের অনুমোদনক্রমে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।

এছাড়া তার স্ত্রী রোকেয়া রহমানকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ করলে একই তারিখে তিনি দুদকে যে বিবরণী দাখিল করেন, তদন্তে তার সঙ্গে ৮ কোটি ১৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯১৯ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন সময়ে ১ কোটি ৭৬ লাখ ১৬ হাজার ৯৪ টাকা জমা এবং ১ কোটি ৭৫ লাখ ২৭ হাজার ৯৮ টাকা উত্তোলন করেন। যা অস্বাভাবিক লেনদেন। এসব বিষয় আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার পর থেকে মতি আদালতে হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়।

কে এই মতি: সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী সুমিলপাড়ার আইলপাড়া এলাকার মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে মতিউর রহমান মতি। আশির দশকে তিনি শিমুলপাড়া এলাকায় মুনলাইট সিনেমা হলের টিকিট ব্ল্যাকে  বিক্রি করতেন। তৎকালিন জাতীয় পার্টির নেতা সফর আলী ভূ্য়াঁর হাত ধরে নাম লেখায় রাজনীতিতে।

নব্বই দশকে এসও রোড এলাকায় বিএনপির মিছিলে বোমা হামলা করে আলোচনায় আসেন মতি। ওই বোমা হামলায় মনা নামে এক পথচারী নিহত হয়েছিলেন। তার দুই বছর পর নিজ বাড়িসংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদের উপর শাহ আলম বাবু নামে এক যুবককে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করার পর থেকেই তিনি বনে যান এলাকার ত্রাস। জাতীয় পার্টি ছেড়ে যোগদেন যুবলীগে। এলাকায় শুরু করেন বেপরোয়া চাঁদাবাজি। গড়ে তুলেন অপরাধ জগতের সাম্রাজ্য ।

২০০১ সালে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান বিদেশে। ২০০৯ সালে দেশে এসে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আত্মসমর্পণ  করে প্রায় ১ বছর জেল হাজত বাস করে জামিনে বের হয়ে ফিরেন এলাকায়। হন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহবায়ক । এর পর থেকেই বদলাতে থাকে তার ভাগ্য। গড়তে থাকেন অর্থের পাহাড়।

২০১৬ সালে নাসিকের দ্বিতীয় নির্বাচনে হন ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর। তৃতীয় নির্বাচনেও তিনি বিজয়ী হন। একদিকে জনপ্রতিনিধি অপর দিকে থানা যুবলীগের আহবায়ক  হওয়ায় ক্ষমতাধর হয়ে উঠেন মতি। এলাকার অবৈধ আয়ের উৎস নিয়ন্ত্রনসহ বিভিন্ন খাত থেকে অবৈধ পন্থায় হাজার কোটি টাকার মলিক হয় মতি। নব্বই দশক থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে হত্যা, বিস্ফোরক, দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ২৪টি মামলা হয়। যার মধ্যে ৩টি মামলা বিচারাধিন, ১টি হাইকোর্ট হতে স্থগিত আর বাকিগুলো খালাস ও আপোষ মিমাংশায় অব্যাহতি পায়।

দুদকের মামলা চলমান থাকার পরও থেমে থাকেনি  মতির অবৈধ সম্পদ অর্জনের গতি।

সর্বশেষ - ঢাকা

আপনার জন্য নির্বাচিত