আলোরধারা ডেস্ক:
আজ ০৩ আগষ্ট ২০২২ ইং রোজ বুধবার বিকাল ৪.০০ ঘটিকায় নারায়ণগঞ্জের চাষাড়াস্থ পৌর শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে বাংলদেশ মেন’স রাইটস ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগ ডিভোর্স প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানবন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন অত্র সংঘঠনের সদস্য হাজী নাজমুল হাসান বাবেক, সামিউল কুদ্দুস শেখ,মোঃ ওবায়দুর রহমান সহ সংঘঠনের সদস্যরা। আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ তথ্য মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মোঃ রাশেদুজ্জামান। উক্ত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন অত্র সংঘঠনের চেয়ারম্যান শেখ খায়রুল আলম।
অবশেষে চেয়ারম্যান সাহেব তার বক্তব্যে বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, শহর গ্রামে ডিভোর্সের হিড়িক। কি শহর, কি গ্রাম, রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে দেশের সব বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে বিবাহ বিচ্ছেদ বা ডিভোর্সের হার আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে ঢাকার বাইরে অন্যান্য সাত বিভাগে ও এই হার উদ্বেগজনক। আশঙ্কার বিষয় সংসার ভাঙার এই হার বিভাগীয় শহর গুলোতে বৎসর বৎসর বাড়ছে। নারায়ণগঞ্জে দিনে ০৮ তালাক এবং ঢাকায় প্রতি ঘন্টায় দুইটি বিবাহ বিচ্ছেদ হচ্ছে। আর নিম্মবিত্ত, মধ্যবিত্ত,উচ্চবিত্ত সব শ্রেণীর পেশার মানুষই বিচ্ছেদ ঘটাচ্ছেন।
শিক্ষিত ও কর্মজীবিদের মধ্যে বিচ্ছেদের হার তুলনামুলক বেশি। বাংলাদেশের নারীরা পুরুষের চেয়ে তিন গুন বেশি হারে বিবাহ বিচ্ছেদ এর জন্য সিটি কর্পোরেশনের কাছে আবেদন করছেন। নারীদের অতিরিক্ত জেদ এবং সেক্রিফাইজ না করার কারণেই বেশি বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটছে। পুরুষরা সন্তানের কথা চিন্তা করে সেক্রিপাইস করছে বলে এখন ও অনেক সংসার টিকে আছে। অনেকাংশে শাশুড়ি এবং মায়ের অতিরিক্ত জেদ ও ইগোর কারণেও ডিভোর্স হচ্ছে। ডিভোর্সের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সন্তানরা। এর দায় কে নিবে?
আমার পরিচিত ডিভোর্সী বাবা-মায়ের এক সন্তান ব্যারিস্টার পাশ করে পিতা-মাতার বিরুদ্ধে মামলা করবে, কি অপরাধে তিনি শাস্তি পেলেন? ডিভোর্সের আইনটি কঠিন করতে হবে। বিভিন্ন পুরুষদের অভিযোগ থেকে জানাগেছে অতিরিক্ত দেনমোহর এর কারনে স্ত্রীরা তালাক দিচ্ছে। দেনমোহর পাত্রের আয়ের সাথে সামঞ্জস্য পূর্ণ হতে হবে। পবিত্র কোরআনের সুরা আল-বাকারার আয়াত নং ২২৯ অনুসারে যদি কোন স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে মুক্ত হতে চান তবে তাকে কোন কিছুর বিনিময়ে হতে হবে,যা তার মোহরানার অতিরিক্ত হবে না। তাই ইসলাম অনুসারে দেখা যায়,স্ত্রী কর্তৃক স্বামী ক্ষতিগ্রস্থ হলে স্ত্রী স্বামীকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য। কিন্তু আমাদের দেশীয় আইন অনুযায়ী স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাক প্রধান করা হলেও স্বামীকে দেনমোহর প্রধান করতে হয়,যা ইসলামের সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাই আজ এই মানববন্ধন থেকে দাবী জানাচ্ছি স্ত্রী ডিভোর্স দিলে দেনমোহরের সমপরিমাণ টাকা ক্ষতিপূরণ দিবে।
এই আইন কার্যকর করা হলে ডিভোর্স অনেক কমে যাবে। এছাড়াও ডিভোর্সের অনেক কারণ রয়েছে। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থাকার ফলে নারীদের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। নারী উন্নয়নে বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশ রোল মডেল। শিক্ষা দীক্ষা এবং চাকুরির ক্ষেত্রে নারীরা অনেক এগিয়ে গেছে। আমারা এটাকে সাদুবাদ জানাই। নারীদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়ার ফলে চাকুরী এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে নারীরা দ্রুত উন্নতি করছে। অপর দিকে পুরুষদের সুযোগ সুবিধা না থাকায় তারা উন্নতি করতে পারছে না বিধায় অনেক নারী তার স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে দিচ্ছে। অনেক উচ্চ শিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত নারীর উপযুক্ত পাত্রের অভাবে বিবাহ হচ্ছে না।
তাই সময় এসেছে পিছিয়ে পরা পুরুষদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেয়া।এজন্য প্রয়োজন পুরুষ বিষয়ক মন্ত্রনালয়। ডিভোর্সের আরো কারণ আছে। পরকীয়া,ভুল বোঝাবুঝি,সাংসারিক দায়িত্ব পালনে অনীহা,সঙ্গীকে মূল্যায়ন না করা,মাদকাশক্ত,মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন,সন্দেহ প্রবণতা,শ্বশুর বাড়ীর লোকদের দুর্ব্যবহার,সন্তান ধারনে অক্ষমতা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্তি। অনেক জানতে পারে না তার স্ত্রী তাকে ডিভোর্স দিয়েছে। অথছ তার স্ত্রী অন্যের সাথে বিবাহ হয়ে গেছে। কাজেই ডিভোর্সের নিয়ম সঠিকভাবে পালন করতে হবে। অনেক পুরুষ আবার সহকর্মীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে স্ত্রীকে কাবিনের টাকা দিয়ে বিদায় করে দিচ্ছে। এজন্য দন্ডবিধি ৪৯৭ ধারাটি সংশোধন করে পরকীয়ায় লিপ্ত পুরুষ এবং নারী উভয়ের শাস্তির ব্যবস্তা করতে হবে। এক সময় বাবা মায়েরা কঠোরভাবে মেয়েকে বলতো লাল কাপড়ে স্বামীর ঘরে যাবা আর সাদা কাপড়ে ফেরত আসবা। বর্তমানে মেয়ের মায়ের অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ এর কারণে মেয়েরা ডিভোর্সে উৎসাহী হয়ে উঠেছে।
নারী নির্যাতন দমন আইনের অপব্যবহারের কারণেও ডিভোর্স বাড়ছে। কাজেই সময় এসেছে নারী নির্যাতন দমন আইনের সংশোধন এবং পুরুষ নির্যাতন দমন আইন করা। সেই সাথে পুরুষ বিষয়ক মন্ত্রনালয় করা হলে পিছিয়ে থাকা পুরুষরা এগিয়ে যাবে, ডিভোর্সের সংখ্যাও কমে যাবে এবং উচ্চ শিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত মেয়েরাও উপযুক্ত পাত্র পাবে।