এক সময়ের শাকা চৌধুরীর সহযোগী এখন সোনারগাঁয়ের আতঙ্কের নাম রাসেল

নিজস্ব সংবাদদাতা:

বিভিন্ন অপকর্ম করেও বার বার পার পেয়ে যাওয়া বর্তমানে সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাড়ি মজলিশ এলাকার মুর্তিমান আংতকে পরিনত হয়েছে তারা। তাদের নানা অপকর্মে সাধারন ও নিরীহ মানুষ রীতিমত ভীত ও সন্ত্রস্থ হয়ে উঠেছে। চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ী রাসেল (৩৫) বাড়ী মজলিস এলাকার মৃত. লোকমান হেকিমের ছেলে, তার সহযোগী সন্ত্রাসী উজ্জ্বল মাদক ব্যবসায়ী ও একই উপজেলার হাবিবপুর এলাকার মুত. আফসারের ছেলে উজ্জ্বল (৩২) এখন অন্যতম আতঙ্কের নাম।

বছরের পর বছর ধরে তাদের নানা অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার স্থানীয়রা। তাদের বিরুদ্ধে “টু” শব্দটি করার সাহস ও শক্তি পর্যন্ত হারিয়েছে স্থানীয় অনেকে। সরেজমিনে ঘুরে ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এমন তথ্যই মিলেছে। এমন অবস্থা বিরাজ করলেও তা চোখে পড়ছে না সোনারগাঁয়ের স্থানীয় প্রশাসনের। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চরম আতঙ্ক এবং ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী প্রশাসনের জোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

উল্লেখ্য, গত (২২ ফেব্রুয়ারি) মুজিবর নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর নিকট থেকে দেড় লক্ষ টাকা চাঁদাদাবি করে উল্লেখিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাজারা। তাদের দাবীকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ওই ব্যবসায়ীকে মারধর করে মাদক ব্যবসায়ী রাসেল তার সহযোগী সন্ত্রাসী উজ্জ্বলসহ ৫/৭ সন্ত্রাসী। এসময় সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ উজ্জ্বল ব্যবসায়ী মজিবরের ক্যাশ বাক্স থেকে ৭৫ হাজার টাকা চিনিয়ে নিয়ে যায়।
এদিকে ব্যবসায়ীকে মারপিটের চিৎকার শুনে মোতালেব মার্কেটের মালিকের ছেলে তাজুল ইসলাম তাদের বাঁধা দিলে তাকেও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে তারা। এ ঘটনা ভুক্তভোগী মুজিবর সোনারগাঁ থানায় লিখিত একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় স্থানীয় কয়কটি পত্রিকায় ও কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে এই সংবাদ প্রকাশিত হয়।চাঁদাবাজ রাসেলের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় ২০০৯ সালে একটি মাদক মামলা রয়েছে, যার মামলা নং ১৯। সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। এছাড়াও সোনারগাঁ থানায় একাধিক চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে সন্ত্রাসী উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় মাদক, ছিনতাই, ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং ডাকাতিসহ ডজন খানেক মামলা রয়েছে।

এককালের বিএনপি নেতা রাসেল এখন বনে গেছেন সাংবাদিক। এ-ই কথিত সাংবাদিক রাসেলের ফেনসিডিল সেবনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভাইরাল হয়। এছাড়াও যুদ্ধপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সাথে ছিল তার ঘনিষ্ঠতা। সেই ছবিও সামাজিক যোগাযোগ ম্যাধমে ভাইরাল হয়েছে। সাংবাদিকতার কার্ড ব্যবহার করে এই মাদক ব্যাবসায়ী রাসেল ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড সন্ত্রাসী জুয়েলসহ এলাকায় রয়েছে একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছে তারা লাখ লাখ টাকা। রাসেল ও উজ্জলের নেতৃত্বে এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ব্লাকমেইন ,সম্পত্তি দখল, মাদক ব্যাবসা, বাড়ি নির্মাণে চাঁদা আদায়, পুলিশের ভয় দেখিয়ে ও মাদক মামলায় চালান করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা আদায় প্রতিনিয়ত করে আসছে সে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভুগী জানান সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার মোগরাপাড়া ও এর আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি করে আসছে এই সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ রাসেল। সে একজন বিএনপির সক্রিয় কর্মী। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী, দালালী ও দুর্নীতিসহ পুলিশের সোর্স হিসেবে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালচনায় রয়েছে।

বহু লোকজনের নিকট থেকে সে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। কিন্তু কাউকেই সে চাকুরী দিতে পারেনি। অর্থ আত্মসাৎ থেকে বাঁচার জন্য রাতারাতি সাংবাদিক বনে যায় সে। সাংবাদিকতার নাম ভাঙ্গিয়ে এখন এলাকায় আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজ রাসেল।

সোনারগাঁ থানার (ওসি) তদন্ত আহসান উল্লাহ বলেন, চাঁদাবাজির একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে অপরাধ দমনে পুলিশ চেষ্টা করছে।